জাতীয় শোক দিবস রচনা pdf | বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা

জাতীয় শোক দিবস রচনা pdf

আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ ৷ সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা নিন ৷ আপনি জাতীয় শোক দিবসের রচনা অনলাইনে খুঁজছেন ৷ আপনার চিন্তা মাথায় নিয়েই আমরা জাতীয় শোক দিবস রচনা আর্টিকেলটি প্রকাশ করছি ৷ আপনি পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন ৷ জাতীয় শোক দিবস রচনা লিখতে আপনার জন্য সহজ হবে ৷

জাতীয় শোক দিবস রচনা pdf

বিভিন্ন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় ৷ অনেকেই রচনা লিখতে গিয়ে হিমশিম খান ৷ আপনাদের কথা মাথায় নিয়েই আজ আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবির্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় শোক দিবস রচনা pdf আর্টিকেলটি প্রকাশ করছি ৷

জাতীয় শোক দিবস কী?

জাতীয় শোক দিবস রচনা pdf
জাতীয় শোক দিবস রচনা pdf

জাতীয় শোক দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি জাতীয় দিবস। প্রতিবছরের ১৫ আগস্ট জাতীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে এ দিবসটি শোকের সাথে পালন করা হয়। এ দিবসে কালো পতাকা উত্তোলন ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ দিবসের উৎপত্তি।

 

জাতীয় শোক দিবসের ইতিহাস

­­­১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসায় সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন। সেদিন তিনি ছাড়াও নিহত হন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। এছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনসহ নিহত হন আরো ১৬ জন।

ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজি মজিবুর রহমানকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি ৷ বরং তার পরিবারবর্গের অন্যান্য আরো 16 জন নিহত হয় ৷ ১৫ আগস্ট নিহত হন মুজিব পরিবারের সদস্যবৃন্দ: ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু পুত্র শেখ রাসেল; পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজী কামাল; ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগনে শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি। বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসেন কর্নেল জামিলউদ্দীন, তিনিও তখন নিহত হন। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও তার ছোটবোন শেখ রেহানা।

প্রতি বছর ১৫ আগস্ট জাতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল সদস্যদের, পালিত হয় জাতীয় শোক দিবস।

কবে জাতীয় শোক দিবসের ঘোষণা হয়

বাংলাদেশের যতগুলো হত্যাকান্ড হয়েছে এর মধ্যে অন্যতম জঘন্য হত্যাকান্ড হলো ৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার বর্গের উপর নৃশংস হত্যাকাণ্ড ৷ বাংলাদেশের সর্বপ্রথম শোক দিবস পালন করা হয় ১৯৯৬ সালে ৷ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ড এবং তার খুনিদের বিচারে তৎপর হয় ৷ এবং 1996 সালে সর্বপ্রথম ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয় ৷

 

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের খুনীদের বিচার

দায়মুক্তি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এসব খুনিকে বিচারের সম্মুখীন হওয়া থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিচারের উদ্যোগ নেয় এবং বিচারিক কাজ শেষে ২০১০ সালে আদালতের রায় অনুসারে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় খুনি এখনো পলাতক রয়েছে।

জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচী

জাতীয় শোক দিবস রচনা pdf
জাতীয় শোক দিবস রচনা pdf

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ছয়টায় ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, সকাল সাড়ে সাতটায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিল। সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। দুপুরে অসচ্ছল, এতিম ও দুস্থ ব্যক্তিদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করা হবে।

 শোক দিবসের বক্তৃতা প্রতিযোগিতা ভিডিও

 

বঙ্গবন্ধুর জীবনী

শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০ – ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু ৷ ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।

পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্ব রাখেন ৷

এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।

জাতীয় শোক দিবস রচনা pdf
জাতীয় শোক দিবস রচনা pdf

ছড়া-কবিতা প্রেমীরা পড়তে পারেন— নিচের লিংকে ক্লিক করুন ৷

জাতীয় শোক দিবসের ছড়া-কবিতা

 

বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু

বাংলাদেশের নামের সাথে মিশে আছে যে নাম সেটা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৷ বাংলাদেশের একচ্ছত্র এবং অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের নাম অগ্রগণ্য ৷ তিনি এক বিস্ময় বালক ৷ জন্মের পর থেকেই দেশ মাটি ও মানুষের ভাবনা তাকে তাড়িত করতো ৷ তিনি ছোটবেলা থেকেই একজন মানবিক বালক ছিলেন ৷ এবং খেলাধুলার সাথীদের মধ্যে নেতা হয়ে ওঠেন ৷ তিনি সবার সুখে দুখে পাশে থাকবার চেষ্টা সেই শৈশব কাল থেকেই করে আসছেন ৷

 

তার ছোট্টবেলার চমৎকার কিছু ঘটনা আমরা জানি ৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার মা তার ছোটবেলার একটি কয়েকটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তখন অনেক ছোট ৷ তিনি স্কুলে পড়াশোনা করেন ৷ তখন থেকেই তার মধ্যে মানবতাবোধ জাগ্রত হয় ৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একদিন বৃষ্টির সময় স্কুলে গেলেন ৷ ছাতা নিয়ে ৷ কিন্তু স্কুল থেকে ফিরলেন খালি হাতে ৷ অর্থাৎ শূন্য হাতে ৷ তিনি ছাতা নিয়ে গিয়েছিলেন ৷ কিন্তু বাড়িতে প্রবেশ করলেন ছতা ছাড়া ৷

খোকা ছাতা নিয়ে বেরিয়েছিল কিন্তু সেই ছাতা ছাড়াই বাড়িতে এসেছে ৷ বঙ্গবন্ধুর মা জিজ্ঞাসা করলেন ৷  স্কুলে গিয়েছিলে সেই ছাতাটি কোথায়?  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অত্যন্ত সাবলীল ভাবে ৷ নম্র ভাষায় তার মাকে বললেন, মা আমার এক ক্লাসমেট বন্ধু ৷ যে প্রতিদিন বৃষ্টিতে ভিজে স্কুলে আসা-যাওয়া করে ৷ তাকে ছাতা কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্য তার পরিবারের নাই ৷ তার কষ্ট দেখে আমার ভীষণ মায়া হয় ৷ তাই আমার ছাতাটি আমার সেই বন্ধুকে দিয়ে এসেছি ৷ যাতে করে সে ছাতা নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসা যাওয়া করতে পারে নির্দ্বিধায় ৷ তাকে যেন আর বৃষ্টিতে ভিজতে না হয় ৷ সে কারণেই মূলত তাকে দিয়েছি ৷

তিনি বুঝতে পারলেন তার পুত্র এখন আর ছোট নেই ৷ সে এখন নিজেকে নিয়ে শুধু ভাবনার বয়সে নাই ৷ দুঃখ এবং দুর্দশাগ্রস্থ মানুষদের নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছে ৷ সে তার প্রতিবেশী এবং ক্ষুধার্ত মানুষদের নিয়ে ভাবছে ৷ ভবিষ্যতে অনেক বড় কিছু হবেন বঙ্গবন্ধু ৷ সে স্বপ্ন এবং আশায় দেখছিলেন বঙ্গবন্ধুর মা ৷

পাঠক! শুধু তাই নয় ৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই ছোট্টবেলা থেকেই এমন একটি পরিবারে বড় হয়েছেন ৷ যারা নিঃস্বার্থবান ছিলেন ৷ অপরকে দেয় যেন তাদের কর্তব্য ৷ আরো একদিনের ঘটনা ৷ প্রচন্ড শীত ৷ হিম কুয়াশা চারদিকে ৷ মানুষ শীতে কাতরাচ্ছে ৷ অনেক অভাবী এমন রয়েছে ৷ যারা এক মুঠো খাবারই পায় না শীতের পোশাক কিনবে কি করে ৷ শীতে সারা দেশ নাকাল অবস্থা ৷ একদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চাদর জড়িয়ে বাইরে কোথাও গিয়েছিলেন ৷ যখন ঘরে ফেরত আসলেন তখন দেখা গেল বঙ্গবন্ধুর গায় সে চাদরটি নেই ৷

তখন বঙ্গবন্ধুর মা ভাবলেন হয়তো বা ছেলে চাদরটি কোথাও ফেলে এসেছে ৷ বঙ্গবন্ধুর মা তাকে জিজ্ঞেস করলেন ৷ বাবা তোমার চাদরটি কোথায় ফেলে এসেছো? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চোখ ছলছল কন্ঠে তার মাকে বলল, মা আজ আমি রাস্তা দিয়ে বাড়ির দিকে আসছিলাম ৷ পথিমধ্যে এক বুড়ি মাকে দেখলাম ৷ যিনি শীতে প্রচণ্ড ভাবে কাঁপছেন ৷ তার এই নাকাল অবস্থা দেখে আমার প্রচন্ড রকমের মায়া হল ৷ তার কষ্ট দেখে আমি ব্যথিত হলাম ৷ আমার মন হু হু করে কেঁদে উঠলো ৷ তাই সেই বুড়িমার কষ্টে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আমার গায়ের চাদরটি খুলে দিলাম ৷

বঙ্গবন্ধুর মা এই কথা শুনে যারপর নাই খুশি হয়েছেন ৷ তিনি ভাবছেন এমন এক সন্তান তিনি গর্ভে ধারণ করেছেন ৷ যে দেশ মাটি ও মানবতার জন্য কাজ করছে ৷

মানুষ মানুষের জন্য এই কথাটির বাস্তব রূপ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৷ তিনি অনেক উঁচু মাপের একজন ব্যক্তি হয়েও সব সময় জনগণের খোঁজ খবর রাখতেন ৷ এমনকি তার দলে থাকা সন্ত্রাসী ও চোর বাটপার খুনি লম্পট দের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন ৷ তিনি চোরদের বিরুদ্ধে ৷

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আপাদমস্তক একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন ৷ ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ৷ দেশ ও জাতির জন্য যিনি এত ত্যাগ করেছেন ৷ দেশ মাটি মানুষের জন্য যিনি কাজ করেছেন ৷ ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের মানুষের কল্যাণের যতগুলো আন্দোলন হয়েছে ৷ সবগুলো আন্দোলনে নিজেকে ব্যাপকৃত রেখে যে মানুষটি দেশের জন্য কাজ করেছেন ৷ মানুষের জন্য কাজ করেছেন ৷ একটা সময় সে দেশ ও জাতি তার সাথে গাদ্দারি করে বসলো ৷ এমন কি এমনকি তাকে ব্রাশ ফায়ার করে দুনিয়া থেকে চির বিদায় করল ৷

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মাটি ও মানুষকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন ৷ তিনি একটি ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন ৷ যেখানে থাকবে না কোন হানাহানি ৷ মারামারি খুন-খুনি ৷ একে অপরের সৌহার্দ্রো সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করে সুন্দর একটি সোনালী সমাজ তিনি উপহার দিতে চেয়েছিলেন ৷

তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশের রাস্তাঘাট যাবতীয় উন্নয়ন সাধিত করতে ৷ তিনি একটি সোনালী সূর্যোদয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন ৷ বাংলাদেশের কোন মানুষ আর খুধার যন্ত্রণায় ছটফট করে মারা যাবে না ৷ আর কোন মেয়ে ধর্ষিতা হবে না ৷ আর কোন চোর বাটপার খুনি ডাকাত বদমাশ লম্পটদের দেখা মিলবে না ৷

বাংলাদেশ হবে একটি রোল মডেল ৷ বিশ্বের জন্য একটি মডেল রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হবে ৷ বাংলাদেশ সারা পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম একটি সেরা দেশ হিসেবে আখ্যায়িত হবে ৷ পরিপূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত নির্মল এক সোন সোনালী স্বদেশ হবে বাংলাদেশ ৷ এমন একটি দেশের স্বপ্ন দেখায় কি বঙ্গবন্ধুর অপরাধ? তবে কি অপরাধে তাকে এভাবে নৃশংসভাবে খুন হতে হলো ৷ বঙ্গবন্ধু মনে করেছিলেন তিনি যেভাবে দেশ পরিচালনা করছেন ৷ এভাবেই তিনি একটি সোনালী সমাজ উপহার দিতে পারবেন ৷ কতিপয় বিশ্বাসঘাত গাদ্দার দেশ ও জাতির শত্রু বঙ্গবন্ধু  এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের আগেই তাকে দুনিয়া থেকে চিরতরে বিদায় করে দেয় ৷

ইসলামী শিক্ষায় বঙ্গবন্ধুর অবদান

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৮ দিনের মাথায় ১৮ জানুয়ারি তার সঙ্গে গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব আলহাজ্ব মাওলানা আবদুস সালাম ও কাপাসিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ওয়ারেছ আলীর সাক্ষাৎ ঘটে। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের মাধ্যমে বঙ্গভবনে এ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘কেউ কেউ হয়তো ভাবছে, বঙ্গবন্ধুর সরকার মাদরাসা শিক্ষার পক্ষে নয়। কিন্তু আমি তো মুসলমানের ছেলে।

মাদরাসা শিক্ষা কি বলছেন, আমি স্কুল কলেজেও কোরআন-হাদিসের শিক্ষাক্রম চালু করবো। তবে ইসলাম নিয়ে যারা বণিজ্য করেছে তাদেরকে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে দেবো না।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের ইসলামি প্রজাতন্ত্র পাকিস্তান তো মদ, জুয়া, রেসের মতো অবৈধ ও ইসলামবিরোধী কাজকেও আইন করে হালাল করে দিয়েছিলো। দেখবেন, সহসাই আমি এসব বাতিল করে দেবো। আমার ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রেও কী করে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, বসে বসে শুধু দেখবেন।’

অতঃপর তিনি তাজউদ্দীন আহমদকে ডেকে অবিলম্বে মাদরাসাগুলো খুলে দেওয়ার এবং পাকিস্তান আমলে শিক্ষকগণ যেভাবে যা পেতো (সরকারি অনুদানসমূহ) সেভাবেই তাদের সকল পাওনা পরিশোধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি অন্যায়ভাবে কোনো আলেমের প্রতি যাতে কোনো অবিচার না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখার কথাও বলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলাম প্রচারে অনেক অনন্য কাজ করেছেন ৷ তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এমন একটি মহৎ কাজ করেছেন যা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না ৷ এই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং অতি প্রয়োজনীয় অনেকগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে ৷ ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে সারাদেশে অসংখ্য মসজিদের মক্তব চালু হয়েছে ৷ যার মাধ্যমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর আরো নানা কর্মসূচি ও কার্যকলাপ রয়েছে ৷ যেগুলো ইসলামের পক্ষে এবং ইসলাম প্রচারে প্রসারে অনন্য ভূমিকা পালন করছে ৷

বঙ্গবন্ধু ইসলাম প্রচারের তাবলীগ জামাতকে প্রতিবছর ইজতেমা তথা মহা সম্মেলন করার জন্য গাজীপুর টঙ্গীতে বিশাল স্পেস করে দিয়েছেন ৷ যেখানে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ একত্রিত হয়ে কিভাবে ইসলামকে দিনকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া যায় তার জন্য কাজ করছেন ৷ এবং সেখানে দ্বীনের জন্য মেহনত সদা সর্বদা চলমান রয়েছে ৷

এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর ইসলামের প্রতি অনেক কর্মকাণ্ড রয়েছে ৷ যেগুলো তার মহত্ব এবং মমত্ব আরো ব্যাপকভাবে ফুটিয়ে তোলে ৷ বঙ্গবন্ধু কোন রাজনৈতিক দলের একক সম্পত্তি নন ৷ তিনি বাংলাদেশের সকল জনতার এবং বাংলাদেশের একটি সম্পদ ৷ সুতরাং তাকে নিয়ে রাজনীতি করবার কিছু নেই ৷ তাকে পুঁজি করে ব্যবসা করারও কোন প্রয়োজন নেই ৷

বঙ্গবন্ধু আছেন আপ অমর জনতার মনের হৃদয় মনি কোঠায় ৷ তিনি থাকবেন ৷ তার জন্য লোকেরা তার ভালো কাজগুলোর জন্য দোয়া করে ৷ তিনি ইসলাম এবং মুসলমানের জন্য যা কিছু করেছেন তার জন্য সবাই দোয়া করে ৷ শত মন থেকে দোয়া চলে আসে ৷ বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু দিবসকে কেন্দ্র করে  অনৈতিক কর্মকাণ্ড করা উচিত নয় ৷ তার জন্য দোয়া করা ৷ কোরআন খতম করা ৷ মসজিদ মাদ্রাসায় দোয়ার আয়োজন করা ৷ কাঙ্গালী ভোজের নামে কোন অনৈতিক কর্মকান্ড ইসলাম সমর্থন করে না ৷ বঙ্গবন্ধু কবরে যেন শান্তিতে থাকতে পারেন সেজন্য তার পরিবারবর্গ ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে পালন করতে পারেন ৷ এবং তার নামে তার পক্ষে ইসলাম ও মুসলমানের জন্য আরও ব্যাপকভাবে কার্যক্রম হাতে নেয়া যেতে পারে ৷ ইসালে সওয়াবের জন্য বঙ্গবন্ধুর পরিবার তার পক্ষে মুসলিম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা এবং জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেদেরকে ব্যবহৃত রাখতে পারে ৷

শেষকথাঃ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে নিয়ে রচনা আপনাদের কেমন লাগলো?  আশা করছি কিছুটা হলে উপকৃত হয়েছেন ৷ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে রচনা লেখার ক্ষেত্রে এই আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *