দেনমোহর কখন পরিশোধ করতে হয়? মোহরানা সম্পর্কে বিস্তারিত

দেনমোহর কখন পরিশোধ করতে হয়? মোহরানা সম্পর্কে বিস্তারিত

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু ৷ আজ আমরা দেনমোহর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করবো ৷ অনেকেই দেনমোহর সম্পর্কে জানার জন্য গুগলে সার্চ করছেন ৷ দেনমোহর কখন পরিশোধ করতে হয়? কিস্তিতে দেনমোহর পরিশোধ করা যায় কিনা? দেনমোহর ছাড়া বিয়ে হয় কিনা? দেনমোহর স্ত্রী কর্তৃক মাপ হয় কিনা? তালাকের পর দেনমোহর পরিশোধের নিয়ম ৷ দেনমোহর পরিশোধ না করলে কি শাস্তি? এ জাতীয় বিষয় জানতে চাচ্ছেন ৷ আমরা বর্তমান নিবন্ধে সবগুলো প্রশ্নের জবাব দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ ৷

আরোও পড়ুনঃ বিয়ের গুরুত্ব, ফজিলত ও নিয়ম কানুন

দেনমোহর কখন পরিশোধ করতে হয়? মোহরানা সম্পর্কে বিস্তারিত

বিয়ে সামজিক নিয়ম ও পারিবারিক বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে নর-নারী হৃদয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। সংসারজীবনে ভুল বোঝাবুঝি থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারণে নামে বিষাদের ছায়া। জীবনে চূড়ান্ত বিপর্যয় থেকে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে রক্ষার জন্য ইসলামে তালাকের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে বিয়েতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে দেনমোহর।

বিয়ের কাবিননামায় স্বাক্ষর ও মৌখিকভাবে বিয়ে পড়ানোর পর সহবাস করার আগে দেমোহর দেয়ার নিয়ম থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা মানা হয় না। তবে বিয়ের পরে যদি দেনমোহর পরিশোধ করতে বিলম্ব হয় তবে স্ত্রীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট করে সময় চেয়ে নিতে হবে ও অবশ্যই দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে।

মনে রাখতে হবে, স্ত্রীর কাছে দেমোহর হচ্ছে স্বামীর ঋণ। স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক দেয় বা স্ত্রী যদি স্বামীকে তালাক দেয় বা স্বামীর যদি মৃত্যু ঘটে তবে অবশ্যই দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। দেনমোহর পরিশোধ করা ইসলামে বাধ্যতামূলক। দেনমোহর পরিশোধ না করলে শেষ বিচারের দিন আল্লাহর কাছে জাবাবদিহি করতে হবে।

আবু দাউদ শরিফে বিবাহ অধ্যায়ে দেনমোহর সম্পর্কে ৩৮০৮নং হাদিসে বিস্তারিত বলা হয়েছে। স্ত্রীর মোহর ফাঁকি দেওয়া অতি হীন কাজ। হাদিসে তাকে বলা হয়েছে ‘ব্যভিচারী’।

কাবিনের টাকা কখন পরিশোধ করতে হয়

দেনমোহর হলো স্ত্রীর কাছে স্বামীর ঋণ। কাবিননামায় দেনমোহরের বিষয়ে উল্লেখ থাকে। দাম্পত্যজীবন শুরু করার সময় স্বামীকে এই দেনমোহর পরিশোধ করতে হয়। স্ত্রী ক্ষমা করা ছাড়া এই ঋণ পরিশোধের বিকল্প কিছু নেই ৷

কাবিননামায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে উশুল। বিয়ের সময় স্বামী যদি স্ত্রীকে গহনা বা অন্য কোনো জিনিস দিয়ে থাকে এবং তা যদি কাবিননামায় লিখিতভাবে উল্লেখ থাকে তবে কাবিনের টাকা থেকে কর্তন যাবে।

তালাকের পরবর্তী সময়ে যদি স্বামীর মৃত্যু হয় তবে স্বামীর রেখে যাও প্রাপ্ত সম্পত্তি থেকে দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটানোর সুযোগ নেই।

স্বামী যদি দেনমোহর পরিশোধ না করে তবে স্ত্রী আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে।

তবে সম্প্রতি অনেকে বিয়েতে আমরা দেখে থাকি অনেক ভারি অঙ্কের কাবিন করা হয়। কাবিন হচ্ছে ইসলামের বিধান অনুযায়ী নারীকে সম্মান করা। স্বামীর সমর্থন অনুযায়ী কাবিন করতে হবে। জোরপূর্বক অতিরিক্ত অর্থের কাবিন ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।

ইসলামে দেনমোহর পরিশোধের নিয়ম

দেনমোহর কখন পরিশোধ করতে হয়?
দেনমোহর কখন পরিশোধ করতে হয়? মোহরানা সম্পর্কে বিস্তারিত

দেনমোহর নির্ধারণে কয়েকটি বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। যেমন- পাত্রীর সামাজিক অবস্থা, বংশমর্যাদা, আর্থিক অবস্থান, ব্যক্তিগত যোগ্যতা ইত্যাদি। পাত্রীর পরিবারের অন্য মহিলাদের (যেমন: ফুফু, বোন) দেনমোহরের পরিমাণের ভিত্তিতেও মোহর নির্ধারিত হয়। এছাড়া পাত্রের আর্থিক সঙ্গতি, সামাজিক এবং পারিবারিক অবস্থানও মোহর নির্ধারণে বিশেষ বিবেচনায় নিতে হবে।

দেনমোহর স্বামীর আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রেখে নির্ধারণ করতে হয়। সর্বোচ্চ দেনমোহরের কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ নেই। দেনমোহরের পরিমাণ নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে স্ত্রীর পারিবারিক অবস্থান ও স্বামীর আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করা প্রয়োজন। মোহর এত অধিক হওয়া উচিত নয় যা স্বামীর পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব নয়; কারো বাড়াবাড়িতে মহর বেশি দিয়ে তা আদায় করতে না পারলে স্বামীকে গোনাহগার হতে হয়।

আবার দেনমোহর এত কম হওয়া উচিত নয় যা স্ত্রীর আর্থিক নিরাপত্তা দিতে পারে না। আর্থিক সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনা করে মোহর ধার্য করলে স্বামী সহজেই পরিশোধ করতে পারবেন এবং প্রাপ্য দেনমোহরের অধিকার থেকে নারীরা বঞ্চিত হবে না।

মোহর একবার নির্ধারণ করার পর এর পরিমাণ কমানো যায় না। তবে স্বামী নিজ উদ্যোগে তা বাড়াতে পারে। স্বেচ্ছায় যদি কেউ স্ত্রীকে বেশি মহর দিতে চায় তা নিন্দনীয় নয়। কারণ যার সামর্থ আছে সে স্ত্রীকে বেশি মহর আদায় করবে তাতে অন্যায়ের কিছু নেই।

যদি কেউ আদালতে দেনমোহর দাবি করেন (বিয়ের সময় মোহর নির্ধারিত না থাকলে) তবে আদালত স্ত্রীর মর্যাদা এবং স্ত্রীর পিতৃকুলের অন্যান্য মহিলার দেনমোহরের পরিপ্রেক্ষিতে মোহর নির্ধারণ করতে পারেন।

কিস্তিতে দেনমোহর পরিশোধের নিয়ম

পাত্রের যদি দেনমোহর পরিশোধ করতে সমস্যা হয়ে থাকে ৷ অথবা আর্থিক সমস্যার কারণে দেনমোহর পরিশোধ করার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করে ৷ আর সেটি যদি আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্স হয়ে থাকে ৷ তাহলে সেখানে সময় নির্ধারণ করার মাধ্যমে কিস্তিতে আপনারা দেনমোহর পরিশোধ করতে পারবেন। আর যদি পারিবারিকভাবে এই সমস্যার সমাধান হয়ে থাকে তাহলে দেখা যাবে যে নির্দিষ্ট সময় পর পর আপনারা দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করলেন।

তালাকের পর দেনমোহর পরিশোধের নিয়ম

স্ত্রী তালাক দিলে দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে কি-না? সহজ উত্তর- যে পক্ষ থেকেই তালাক দেয়া হোক না কেন, দেনমোহরের টাকা অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। আপনার স্ত্রীকে তালাকের পর কিংবা তালাকের আগে দেনমোহর পরিশোধ করতে পারবেন। কারণ দেনমোহর স্বামীর ঋণ, যা স্বামী তাঁর স্ত্রীকে পরিশোধ করতে বাধ্য।

ইসলামে দেনমোহর পরিশোধ না করার শাস্তি

স্ত্রীর মোহর পরিশোধ করা ছাড়া যদি কেউ মারা যায়, স্ত্রীর কাছে মোহরের টাকা দেনাদার হিসাবে কিয়ামতের ময়দানে দাড়াতে হবে ৷ ফুকাহে কেরামান বলেন, কোন মানুষ যদি মারা যায় তার পরিত্যাক্ত সম্পদ থেকে স্ত্রীর মোহরানা পরিশোধ করতে হবে ৷ এটা পাওনাদারের পাওনার মত ৷

দেনমোহর সর্বনিম্ন কত টাকা

মুসলিম বিয়েতে দেনমোহর হচ্ছে স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীর একটি বিশেষ অধিকার। দেনমোহর সাধারণত বর ও কনের সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। দেনমোহর হিসেবে যে কোনো পরিমাণ অর্থ নির্ধারণ করা যায়। কিন্তু কোনো অবস্থায়ই স্বামী ন্যূনতম ১০ দিরহাম বা সমপরিমাণ অর্থ অপেক্ষা কম নির্ধারণ করতে পারবেন না। মুসলিম আইনানুযায়ী দেনমোহর বিয়ের একটি অন্যতম শর্ত। দেনমোহর স্বামী কতৃর্ক স্ত্রীকে পরিশোধযোগ্য একটি আইনগত দায়।

দেনমোহর ছাড়া কি বিয়ে হয়?

অনেক সাধারণ দীনি ভাই-বোন এখনো মনে করেন যে, বিয়ে করলে স্ত্রীকে মোহর দেয়া পর্যন্ত স্পর্শ করা হারাম বা যিনা হতে পারে। এইজন্য খুব কষ্ট করে আগে মোহরের টাকা জোগাড় করেন তারপর বিয়ে করেন। এতে বিয়ে করতে বেশ দেরিও হয়ে যায়। তাছাড়া বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায়তো বিয়েকে অনেক কঠিন করে তুলা হচ্ছে যার তুলনায় হারাম রিলেশন, বেপর্দা, বেহায়াপনা, যিনা ইত্যাদি ততোটাই সহজ হয়ে যাচ্ছে।

তাদের এই জযবাটা যদিও হারাম থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় কিন্তু এটা মারাত্মক ভুল ও গলত ফাহাম। অনেককেতো দেখা যায়, বাসর রাতে স্ত্রীকে স্পর্শ করার আগে ক্ষমা চেয়ে নেন৷ যাতে হারামে লিপ্ত না হোন। অথচ এটা খুবি মূর্খতা নিকৃষ্টতর কাজ।

কেউ এভাবে ক্ষমা চাইলেও অনেক সময় পরিপূর্ণ ক্ষমা হয় না। কারণ এটা একধরনের ইমোশনাল ব্লাকমেল করে ক্ষমা করে নেয়া হয়। এইজন্যইতো স্ত্রী ঐসময় ক্ষমা করলেও বিচ্ছেদের সময় ঠিকই দাবি করে বসে।

আর শরীয়তের বিধান হল, এরকম প্রভাব খাটিয়ে বা সিচুয়েশনে ফেলে লজ্জার তলোয়ারের মাধ্যমে সম্পদ মাপ করে নিলে মাপ হয়না। সুতরাং জজবার আগে শরীয়তকে প্রাধান্য দিতে হবে।

দেনমোহর কখন পরিশোধ করতে হয়? মোহরানা সম্পর্কে বিস্তারিত

মূলত শরীয়তে মোহর দুইভাবে দেয়া যায়,

  • ১. বাকী মোহর (مؤجل)
  • ২. নগদ মোহর (معجل)

স্বামীর কাছে যদি মহর পরিশোধ করার মত সম্পদ না থাকে এবং সে পরে পরিশোধ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে এবং স্ত্রী সেটা মেনে নেয় তাহলে গুনাহ হবে না। এইক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীকে নিষেধ করতে পারবে না।

আর যদি নগদ মোহর দেয়ার শর্ত করা হয়, তাহলে মোহর পরিষদের আগ পর্যন্ত স্ত্রী চাইলে স্বামীকে মোহর দেয়া পর্যন্ত নিষেধ করতে পারে।
الفتاوى الهندية (1/ 318)
الموسوعة الفقہیۃ الکویتیة: (318/49، ط: دار السلاسل)

তবে মহর দেয়া যেহেতু ওয়াজিব তাই সেটা পরিশোধের আগ পর্যন্ত স্বামী তার স্ত্রীর কাছে ঋণী হয়ে থাকবে। ঋন যেমনিভাবে দ্রুত পরিশোধ করতে হয় মহর ও তেমনিভাবে পরিশোধ করতে হবে।

দেনমোহর বাকি রেখে বিয়ে করা যাবে?

এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদেরা বলেন, বিয়ের সময় মোহর বাকি রাখা যায়, তবে যেহেতু মোহর কর্জের অন্তর্ভুক্ত, তাই নগদ আদায় করা উত্তম। পরিশোধ করার নিয়তে দেনমোহর বাকি রেখে বিয়ে বৈধ। এতে বৈবাহিক সম্পর্কে কোনও সমস্যা হবে না। -(মাবসুতুস সারাখসি : ৫/৬২, আল মুজামুল আওসাত : ২/২৩৭)

আর কেউ যদি কূট-কৌশল করে স্ত্রীকে মোহরানা থেকে বঞ্চিত রাখে তাহলে পরকালে স্ত্রীর হক আদায় না করার কারণে আল্লাহ তায়ালার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

মোহরে ফাতেমি কাকে বলে, পরিমাণ কত?

মোহরে ফাতেমি বলা হয়, নবী (সা.) নিজ কন্যা হজরত ফাতিমা (রা.)-কে হযরত আলী (রা.) এর সঙ্গে বিবাহ দেওয়ার সময় যে মোহর নির্ধারণ করেছিলেন, তাকেই মোহরে ফাতেমি বলে।

বর্তমানে মোহরে ফাতেমির পরিমাণ

মোহরে ফাতেমির পরিমাণ হলো সাড়ে বার উকিয়া বা পাঁচশত দিরহাম। আধুনিক হিসেবে হয় ১৩১.২৫ তোলা বা ১.৫৩০৯ কিলোগ্রাম রূপা। এক দিরহামের ওজন হলো ৩.০৬১৮ গ্রাম। বর্তমান বাজারে প্রতি তোলা রূপার মূল্য ১০০০ টাকা হলে মোহরে ফাতেমির পরিমাণ হবে ১৩১৫০০ টাকা।

হাদিস শরিফে এসেছে, ‘রাসূল (সা.) এর কন্যাদের মোহর ছিল সাড়ে বার উকিয়া বা পাঁচশত দিরহাম।’ -(মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ১৬৬৩০)

তবে মনে রাখতে হবে, বিভিন্ন সময় রূপার দাম উঠানামা করে। তাই অবশ্যই বর্তমান বাংলাদেশী টাকায় বর্তমান বাজারমূল্য জুয়েলারীর দোকান থেকে জেনে নিতে হবে। (সুনানে আবু দাউদ ১/২৯৪, জাওয়াহেরুল ফিক্বহ ৩/৪১০, আপকি মাসায়েল ৬/২৮৬)

আরও পড়ুনঃ তালাক দেয়ার নিয়ম ও একসাথে তিন তালাক

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করে হাজারো মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন ৷ আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাও জানাতে পারেন ৷ নিচের কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন নির্দ্বিধায় ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন ৷ আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন ৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান ৷

দেনমোহর কখন পরিশোধ করতে হয়? মোহরানা সম্পর্কে বিস্তারিত
দেনমোহর কখন পরিশোধ করতে হয়? মোহরানা সম্পর্কে বিস্তারিত

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *