[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বাসায় বা খাঁচায় পাখি পালন করার বিধান[/box]
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু ৷ সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ! আমাদের সালাম ও শুভেচ্ছা নিন ৷ আজকে আমরা কথা বলব বাসায় বা খাঁচায় পাখি পালন করার বিধান সম্পর্কে ৷ অনেকে আছেন জীবজন্তু এবং পাখি পুষে থাকেন ৷ পাখি পুষতে পছন্দ করেন ৷ খাঁচায় পাখি দেখতে ভালোবাসেন ৷ পাখির সাথে সখ্যতা করেন ৷ পাখিকে অনেক আদর যত্ন করেন ৷ ভালোবাসেন ৷ খাঁচায় পাখি পালন সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন ইনশাআল্লাহ ৷
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]পাখি পালন সম্পর্কে জানতে চাই[/box]
উস্তাদ! আমি পাখি পালতে চাই। কিন্তু ছোটকালে দুইটা পাখি পালছিলাম ৷ এরপর সারাদিন পাখি পাখি করতে করতে পাখির মতো শুকিয়ে গিয়েছিলাম। পরে আব্বু বিক্রি করে দিয়েছিলো। এখন আবারো কিনতে চাচ্ছি ৷ এ সম্পর্কে ইসলামের বিধান কী? বিস্তারিত জানালে খুশি হবো ৷
আর আমি যদি কবুতর পালি ৷ তখন কি ছাদে নিয়ে ছাড়তে হবে? আমি তো মেয়ে মানুষ ৷ বাসার ছাদে খুব একটা যাই না ৷
মাসুমা আক্তার
কেরানীগঞ্জ, ঢাকা ৷
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বাসায় বা খাঁচায় পাখি পালন করার বিধান[/box]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অসংখ্য সৃষ্টি জীবের মধ্যে পাখি অন্যতম একটি সৃষ্টি ৷ বিভিন্ন রকমের পাখি আমাদের আশেপাশে আমাদেরকে মুখরিত করে রাখে ৷ আমরা পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হই ৷ বিভিন্ন সময় পাখিদের গানে আমরা বিমোহিত হই ৷ অসংখ্য পাখি মিষ্টি মধুর কন্ঠে আমাদেরকে চমৎকার গান শুনিয়ে থাকে ৷ পাখিদের গানে আমাদের ঘুম ভাঙা ভোরে ৷ পাখি যেন আমাদের জীবনের একটা অনুষঙ্গ ৷ অনেককেই পাখি পুষতে দেখা যায় ৷ পাখিকে কিছু বললে সে কথা মতো কাজ করে ৷ পাখি পালন করে অনেকে আনন্দ পায় ৷
ইসলামী শরীয়তে পাখি পালন করা অবৈধ নয় ৷ তবে যে পাখির জন্ম খাঁচাতেই এবং সে খাঁচাতেই বড় হয়েছে ৷ এরকম পাখি পোষা যাবে ৷ পালন করা যাবে ৷ যার পরিপূর্ণ পরিচর্যা এবং খাবার-দাবার দেয়া হয় ৷
কিন্তু যে পাখি উড়ন্ত ৷ যার জন্ম বনেজঙ্গলে হয়েছে ৷ এবং সে উড়ে বেরিয়েছে ৷ এমন পাখি বন্দি করে পালন করা বৈধ হবে না ৷
কবুতর পালনের বিষয়ে একই হুকুম ৷ কবুতর যেহেতু সহজেই পোষ মানা পাখি ৷ সুতরাং এটি ছেড়ে পালা যায় ৷ সম্ভব হলে ছেড়ে পালাই ভালো ৷
হযরত হিশাম ইবনে উরওয়া রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كَانَ ابْنُ الزّبَيْرِ بِمَكّةَ وَأَصْحَابُ النّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَحْمِلُونَ الطّيْرَ فِي الْأَقْفَاصِ.
আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রা. মক্কায় ছিলেন। তখন সাহাবীগণ খাচায় পাখি রাখতেন। (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীস ৩৮৩)
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]কুরআনে পাখির বর্ণনা[/box]
পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহপাক পাখির প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। হজরত ইব্রাহিম, ইউসুফ, দাউদ, সোলায়মান এবং ঈসা আ:-এর কাহিনীতে পাখির বিবরণ আছে। হুদহুদ নামের একটি পাখি ছিল হজরত সোলায়মান আ:-এর বিশ্বস্ত গুপ্তচর ও সংবাদবাহক।
وَ تَفَقَّدَ الطَّیۡرَ فَقَالَ مَا لِیَ لَاۤ اَرَی الۡہُدۡہُدَ ۫ۖ اَمۡ کَانَ مِنَ الۡغَآئِبِیۡنَ ﴿۲۰﴾
আর সুলাইমান পাখিদের খোঁজ খবর নিল। তারপর সে বলল, ‘কী ব্যাপার, আমি হুদহুদকে দেখছি না; নাকি সে অনুপস্থিতদের অন্তর্ভুক্ত’? সুরা নামল: ২০
اَوَ لَمۡ یَرَوۡا اِلَی الطَّیۡرِ فَوۡقَہُمۡ صٰٓفّٰتٍ وَّ یَقۡبِضۡنَ ؔۘؕ مَا یُمۡسِکُہُنَّ اِلَّا الرَّحۡمٰنُ ؕ اِنَّہٗ بِکُلِّ شَیۡءٍۭ بَصِیۡرٌ ﴿۱۹﴾
তারা কি লক্ষ্য করেনি তাদের উপরস্থ পাখিদের প্রতি, যারা ডানা বিস্তার করে ও গুটিয়ে নেয়? পরম করুণাময় ছাড়া অন্য কেউ এদেরকে স্থির রাখে না। নিশ্চয় তিনি সব কিছুর সম্যক দ্রষ্টা।
সূরা মূলক: আয়াত ১৯
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]নবিজী সাঃ এর পাখিপ্রেম[/box]
নবী সা: প্রকৃতির নন্দিত সন্তান পাখিদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন। আল্লাহর এ অনুপম সুন্দর সৃষ্টির প্রতি ছিল তার অতীব আকর্ষণ এবং গভীর অনুকম্পা। শুধু তাই নয়, আল্লাহর প্রত্যেক সৃষ্টির প্রতি ছিল তার অগাধ প্রেম ও ভালোবাসা। হজরত আবদুর রহমান রা: স্বীয় পিতা আবদুল্লাহ রা: থেকে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়তে ক্লিক করুনঃ বালাগাল উলা বিকামালিহি পড়া কি জায়েজ?
তিনি বলেন, ‘আমরা রাসূল সা:-এর সাথে এক সফরে ছিলাম। তিনি বিশেষ প্রয়োজনে বেরিয়ে পড়লেন। ইতোমধ্যে আমরা একটি পাখি দেখলাম যার সাথে দুটো বাচ্চা ছিল। আমরা বাচ্চা দুটো ধরে ফেললাম। এতে পাখিটি তার ডানা বিস্তার করে বাচ্চাদের ওপর ঝাপটা মারতে লাগল।
বাসায় বা খাঁচায় পাখি পালন করার বিধান
এর মধ্যে মহানবী সা: ফিরে এলেন এবং পাখিটির অস্থিরতা দেখে বললেন, বাচ্চাকে আটকিয়ে রেখে কে ওকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছে? ওর বাচ্চা ওকে ফিরিয়ে দাও।’ এরপর রাসূল সা: একটি পিঁপড়ার ঘর দেখলেন যা আমরা জ্বালিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ঘরগুলো কে জ্বালিয়েছে? আমরা বললাম, ‘আমরা জ্বালিয়ে দিয়েছি।’ তিনি বললেন, ‘আগুন দ্বারা শাস্তি দেয়ার অধিকার একমাত্র আগুনের মালিক আল্লাহ ছাড়া আর কারোর নেই।’ (আবু দাউদ)
অন্যায়ভাবে যারা প্রাণী হত্যা করে মহানবী সা: এর বাণীর প্রতি তাদের গুরুত্ব দেয়া দরকার।
শেষ কথাঃ
সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করে হাজারো মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন ৷ আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাও করতে পারেন ৷ আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন ৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান ৷
মাশাআল্লাহ দারুন লিখেছেন মুহতারাম