রাসূলুল্লাহ সা. এর হিজরত ও আমাদের শিক্ষা

রাসূলুল্লাহ সা. এর হিজরত ও আমাদের শিক্ষা

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ ৷ সুপ্রিয় পাঠক! সবাই আমাদের ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা নিন ৷ আজ আমরা কথা বলবো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিজরতের ঘটনা নিয়ে ৷ কিভাবে তিনি হিজরত করলেন ৷ হিজরতের রাতটি কেমন ছিল ৷ হিজরতের রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার উপর কিভাবে রহমত নাযিল করেছিলেন ৷ তার বিস্তারিত আলোচনা থাকবে আজকের নিবন্ধে ৷ আমাদের সঙ্গেই থাকুন ৷ পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন ৷

আরও পড়ুনঃ বিশ্বনবীকে গালমন্দ করার শাস্তি

নবিজীর হিজরতের কাহিনী
নবিজীর হিজরতের কাহিনী

রাসূলুল্লাহ সা. এর হিজরত ও আমাদের শিক্ষা

ইসলামের ইতিহাসে হিজরত যুগান্তকারী এক ঘটনা ৷ বৈশ্বিক ইতিহাসেও হিজরত সর্বাধিক তাৎপর্যপূর্ণ ও সুদূরপ্রসারী ঘটনা। যা বিশ্বনবী সা. এর জীবন ও কর্মে নতুন গতিপথ তৈরি করে। ইসলামের ইতিহাসে বৃহৎ দিগন্তের উন্মোচন করে। যার সিঁড়ি বেয়ে তাওহিদ ঝলকানি দিয়ে ওঠে ৷

নবিজীকে হত্যার পরিকল্পনা

অস্থিতিশীল সমাজ ব্যবস্থার শেষ অস্ত্র হয়ে থাকে সহিংসতা, সন্ত্রাস ও নির্যাতন নিপীড়ন। এতেও যদি প্রতিপক্ষকে দমন করা সম্ভব না হয়, তাহলে সংস্কার বিরোধীরা বিপ্লবী আন্দোলনের মূল নায়ককে হত্যা করতে সংকল্পবদ্ধ হয়। মক্কাবাসীতো আগে থেকেই আক্রোশে অধীর ছিল এবং বিশ্বনবীকে খতম করে দিতেই উৎসুক ছিল। কিন্তু পেরে ওঠেনি। এবার চরম মহূর্ত উপস্থিত। দ্বন্দ্ব সংঘাতের একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিল।

তারা জঘন্যতম কাজটা সম্পন্ন করতে প্রত্যেক গোত্রের শক্তিশালী যুবকদের নির্বাচন করলো ৷ এরপর ঘোষণা করলো, মুহাম্মদ সা. কে যে জীবিত অথবা মৃত ‘নদওয়া’ গৃহে হাজির করতে পারবে, তাকে ১০০ উট পুরস্কার দেওয়া হবে। মক্কার সব গোত্রের শক্তিশালী যুবকরা একত্রিত হয়ে শপথ নেয়, সেদিন রাতেই মুহাম্মদ সা.-এর বাড়ি ঘেরাও করা হবে। এবং তাকে চিরতরে শেষ করে দেওয়া হবে।

তাদের সব পরিকল্পনা আল্লাহ নস্যাৎ করে দিলেন। রাতেই আল্লাহ তাআলা ওহীর মাধ্যমে এই চক্রান্তের কথা তাঁর রাসূলকে জানিয়ে দিলেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! আপনি ঐ সময়টি স্মরণ করুন, যখন কাফিররা চক্রান্ত আঁটছিল যে, তারা আপনাকে বন্দী করবে, অথবা হত্যা করবে কিংবা করবে দেশান্তর। তারা তাদের ষড়যন্ত্র করছিল আর আল্লাহ আপন কৌশল করছিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বোত্তম কৌশলী।-সূরা আনফাল : ৩০

শত্রুবেষ্টিত গৃহ ত্যাগ

আল্লাহ নবীজীকে নির্দেশ দিলেন, রাতে স্বীয় গৃহে শয়ন না করে তাঁর স্থানে হযরত আলী রা.কে রাখতে। প্রিয়নবী সা. হজরত আলি রা.-কে বললেন, ‘তুমি আমার এই সবুজ হাদরামি চাদর গায়ে দিয়ে আমার বিছানায় শুয়ে থাকো। ওদের হাতে তোমার কোনো ক্ষতি হবে না’ ৷ প্রিয়নবী সা. এই চাদর গায়ে জড়িয়ে রাতে ঘুমাতেন। (ইবনে হিশাম, প্রথম খণ্ড, পৃ-৪৮২, ৪৮৩)

নবীজি আল্লাহর আদেশের অপেক্ষায় ছিলেন ৷ যে রাতে শত্রুরা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিলো সে রাতেই হিজরতের নির্দেশ পান ৷ জিবরীল আ. হিজরতের নির্দেশ সম্বলিত আসমানী বার্তা নিয়ে এলেন। আয়াত নাযিল হল, ‘আর হে নবী! আপনি বলুন, হে আমার রব! আমাকে প্রবেশ করান কল্যাণের সাথে এবং আমাকে বের করান কল্যাণের সাথে। আর আমাকে আপনার পক্ষ হতে দান করুন সাহায্যকারী শক্তি।’-সূরা বনী ইসরাইল : ৮০

এরপর রাসুলুল্লাহ সা. এক মুঠো ধুলো নিয়ে বাইরে এলেন এবং কাফেরদের দিকে নিক্ষেপ করলেন। ধূলো গিয়ে পড়লো সবার চোখে মুখে ৷ এতেই আল্লাহ তাআলা তাদের অন্ধ করে দিলেন। ফলে তারা আল্লাহর রাসুলকে দেখতে পেল না। সেসময় নবীজি সা. এই আয়াত তেলাওয়াত করছিলেন যে ‘আমি ওদের সামনে প্রাচীর ও পশ্চাতে প্রাচীর স্থাপন করছি এবং ওদেরকে আবৃত করছি। ফলে ওরা দেখতে পায় না।’ (সুরা ইয়াসিন: ৯)

এরপর তাদের ওই অন্ধ অবস্থায় তিনি ধীর পায়ে এগিয়ে গেলেন। ওঁত পেতে থাকাদের কেউ কিছুই দেখতে পেল না। নবীজি তখন হজরত আবু বকরের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হলেন। সেই ঘরের একটি জানালা পথে বেরিয়ে উভয়ে মদিনার উদ্দেশে ইয়েমেনের পথে যাত্রা করলেন। কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত সওর পাহাড়ের একটি গুহায় তাঁরা যাত্রাবিরতি করলেন। (ইবনে হিশাম, প্রথম খণ্ড, পৃ-৪৮৩; জাদুল মাআদ: দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ-৫২)

আসমা রা. এর গোয়েন্দাগিরি

বিশ্বনবী যে তাঁর ঘরে নেই কাফেররা তা জানতে পারলো সূর্যোদয়ের পরে ৷ তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে ৷ কিন্তু কূটবুদ্ধির কুমির আবু জাহেল আবু বকর রা. ঘরের দিকে ছুটলো ৷ তখনো সে জানতো না আবু বকর রা. ও আল্লাহর রাসূল সা. একসাথে হিজরত করেছেন ৷ তবে এতটুকু সে বুঝেছে নবিজীর কথা আবু বকর জেনে থাকবে ৷ বাড়ি পৌঁছেই আবু জেহেল প্রচন্ডভাবে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকলো ৷ আসমা রা. দরজা খুললেন ৷ সে জানতে চাইলো আবু বকর রা. কোথায়? আসমা রা. খুব শান্তভাবে উত্তর দিলেন- “আমি কি করে জানবো?” আবু জাহেল এতে প্রচন্ড রেগে গিয়ে আসমা বিনতে আবু বকরকে এত জোরে চড় মারলো যে তার কানের দুল ছিটকে পড়ে গেলো।

মক্কা তখন থমথমে বিরাজ করছে ৷ সেইসময় বিশ্বনবীর হিজরতের খবর লুকোনই না বরং তিন দিন পর্যন্ত আসমা রা. এমনভাবে তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দিতেন যেনো কেউ টের না পায় ৷ পুরো বিশ্বের মুসলিমদের জন্য তিনি আল্লাহর ওপর নির্ভরতার, সাহসিকতার এক মূর্ত প্রতীক।

মুহূর্তটা ছিলো খুবই ভয়ঙ্কর ৷ আসমা রা. এই সময় ভরকে গেলে কিংবা ভেঙ্গে পড়লে বিশ্বনীর হিজরত ভুন্ডুল হয়ে যেতে পারতো ৷ এই বিপন্ন মুহূর্তে ঠিক বাবার মতই শক্ত ভূমিকা পালন করলেন ৷ আর আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসের অধিকারী আসমা বিনতে আবু বকর মক্কার সব থেকে প্রতাপশালী নেতার মুখোমুখি হয়েছিলেন দৃঢ়তার সাথে।

নবীপত্নী আয়েশা (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) মদিনায় হিজরতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করার সময় আমরা তাড়াতাড়ি করে কিছু খাবার পাকিয়ে একটি থলেতে করে রেখে দিলাম। কিন্তু থলেটি বাঁধার জন্য রশি-দড়ি জাতীয় কোনো কিছু পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই বড় বোন আসমা (রা.) কোমরবন্ধ খুলে দু’ টুকরো করে এক টুকরা দিয়ে থলেটির মুখ বাঁধলেন। এ কাজটি তাঁর এত সম্মান বয়ে এনেছে যে, ইতিহাসে তাকে জাতুন-নিতাকাইন বলে স্মরণ করা হয়। (বোখারি, হাদিস ৩৯০৫)।

সাওর গুহায় আত্মগোপন

মক্কা থেকে উল্টো পথ ধরলেন নবিজী সা. ৷ যাতে শত্রুরা আঁচ করতে না পারে ৷ প্রায় পাঁচ মাইল পথ দক্ষিণে ইয়েমেনের দিকে হেঁটে সাওর নামক পর্বতে গুহায় এসে যাত্রা বিরতি করেন ৷ পাহাড়টি ছিল খুব উঁচু, পর্বত শীর্ষে আরোহণের পথ ছিল আঁকাবাঁকা ও পাঁক জড়ানো। আরোহণের ব্যাপারটিও ছিল অত্যন্ত কষ্ট ও আয়াশ-সাধ্য ৷ নবিজী উঠতে গিয়ে আঘাতে রক্তাত্ত হয়েছিলেন ৷ পদচিহ্ন মুছে দিতে আঙুলে ভর দিয়ে হেঁটে আসায় যাত্রা ছিলো আরও কষ্টসাধ্য ৷

রাসূলুল্লাহ সা. এর হিজরত
রাসূলুল্লাহ সা. এর হিজরত

গুহায় আবু বকর রা. আগে প্রবেশ করলেন ৷ পরিচ্ছন্ন করে গুছিয়ে নিলেন ৷ গর্তগুলো আটকে নিলেন ৷ কাপড়ের টুকরোর ঘাটতির কারণে দুটো ছিদ্র মুখ বন্ধ করা সম্ভব হল না।

আবু বকর রা.-এর পুত্র আবদুল্লাহও তাদের সাথে রাত্রীযাপন করতেন ৷ তবে সুবহে সাদিকের আগেই মক্কায় এসে সবার সাথে মিশে যেতেন ৷ মুশরিকরা নবিজী সা. এর বিরুদ্ধে কী ষড়যন্ত্র করতো তার তথ্য অত্যন্ত সঙ্গোপনে তিনি সরবরাহ করতেন ৷

অন্যদিকে আবু বকর রা.-এর গোলাম আমির ইবন ফুহাইরা পাহাড়ের পাদদেশে ছাগল চরাত এবং যখন রাতের একাংশ অতিবাহিত হয়ে যেত তখন সে ছাগল নিয়ে গারে সওরের নিকটে যেত এবং নবী সা. এবং তাঁর সাহাবীকে রা. দুগ্ধ পান করাত। আবার প্রভাত হওয়ার প্রাক্কালে সে ছাগলের পাল নিয়ে দূরে চলে যেত। পরপর তিন রাতেই সে এরূপ করল ৷ অধিকন্তু আবদুল্লাহ ইবন আবু বকরের গমনাগমন পথে তাঁর পদ চিহ্নগুলো যাতে মিশে যায় তার জন্য আমির বিন ফুহাইরা সেই পথে ছাগল খেদিয়ে নিয়ে যেত ৷

কাফেররা গুহামুখে এসেও ফিরে গেলো

মক্কার কাফিররা থেমে নেই ৷ হন্যে হয়ে খুঁজছে নবিজীকে ৷ একশত উট প্রাপ্যের নেশা তাদের আচ্ছন্ন করে রেখেছে ৷ তারা এমন তুখোর মেধা ও পদচিহ্ন বিশারদ ছিলো যে খুঁজতে খুঁজতে সাওর পর্বতের মুখে এসে উপস্থিত হলো ৷ নবিজীর জীবন শংকায় আবু বকর রা. আঁতকে উঠলেন ৷ এই বুঝি নিচে তাকালো ৷ আর দেখে ফেললো! কী হবে প্রাণপ্রিয় নবীর?

এ সময় রাসূলুল্লাহ সা. বলেছিলেন ‘চিন্তা করবেন না। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আমাদের সঙ্গে আছেন। বিষয়টির বর্ণনা আল্লাহ দিয়েছেন এভাবে, “যদি তোমরা তাকে (রাসূলকে) সাহায্য না কর, তবে মনে রেখো আল্লাহ তাকে সাহায্য করেছিলেন যখন কাফিররা তাকে বের করেছিল, যখন তিনি ছিলেন দু’জনের দ্বিতীয়জন। যখন তারা গুহার মধ্যে ছিল। যখন সে তার সাথীকে বলেছিল, চিন্তিত হয়ো না, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। অতঃপর আল্লাহ তার প্রতি স্বীয় প্রশান্তি নাজিল করলেন এবং তার সাহায্যে এমন বাহিনী পাঠালেন, যা তোমরা দেখোনি। আর আল্লাহ তায়ালা কাফিরদের শিরকি কালেমা নিচু করে দিলেন। বস্তুত আল্লাহর তাওহিদের কালিমা সদা উন্নত আছেই। আল্লাহ হলেন পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়’।” (সূরা তাওবা : ৪০)

রক্তপিপাসু শত্রুকে সামনে রেখে ঐ সময়ের নাজুক অবস্থায় ‘চিন্তিত হয়ো না, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন’, এই ছোট্ট কথাটি মুখ দিয়ে বের হওয়া কেবলমাত্র তখনই সম্ভব, যখন একজন মানুষ সম্পূর্ণরূপে কায়মনোচিত্তে নিজেকে আল্লাহর ওপরে সোপর্দ করে দেন ৷ বিশ্বনবি জানতেন আল্লাহ অবশ্যই সাহায্য করবেন ৷ শক্তিতে ওদের সাথে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব না ৷ স্বয়ং আল্লাহর নুসরত ছাড়া ৷

আল্লাহর সাহায্যই ছিলো মুখ্য

সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তারা সারা পর্বতজুড়ে নবিজীকে খুঁজেছে ৷ তন্ন তন্ন করে খুঁজে গুহামুখে পৌঁছে কী মনে করে গুহার ভেতরেও দৃষ্টি দেয়নি! অথচ নবিজী তাদের পায়ের আওয়াজ শুধু শোনেনই নি ৷ দেখেছেনও ৷ তাদের এই মনের পরিবর্তনটাই আল্লাহর পক্ষ থেকে ছিল সরাসরি গায়েবি মদদ এবং রাসূল সা.-এর অন্যতম মু‘জিযা। আল্লাহ বলেন, ‘তোমার প্রভুর সেনাবাহিনীর খবর তোমার প্রভু ব্যতীত কেউ জানে না’ (সূরা মুদ্দাছছির : ৩১)। আর এ কারণেই হাজারো প্রস্তুতি নিয়েও অবশেষে কুফরির ঝাণ্ডা অবনমিত হয় ও তাওহিদের ঝাণ্ডা সমুন্নত হয়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন যারা আল্লাহ ভীরুতা অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্মশীল’। (সূরা নাহল : ১২৮)

হিজরতের তাৎপর্য ও শিক্ষা

বিশ্বনবী মদিনায় হিজরত করে তার চেহারা পরিবর্তন করে দিলেন ৷ সেখানে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা করে সে রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান হলেন তিনি ৷ তিনি হলেন পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ও আদর্শ রাষ্ট্রপতি। যে সম্মান ও মর্যাদা আল্লাহ তার প্রিয় রাসূলকে দিয়েছেন, তা শুধু মদিনাবাসীর জন্য নয়, সমগ্র মানবজাতির জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমার কাছে সত্যসহ কিতাব নাজিল করেছি যাতে করে তুমি আল্লাহর দেখানো নিয়ম অনুযায়ী মানুষের মাঝে শাসন করতে পারো। আর তুমি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষে বিতর্ককারী হয়ো না।’ (সূরা নিসা : ১০৫)

হিজরত প্রকৃতপক্ষে নির্যাতন থেকে সাময়িক বিরতি মাত্র ৷ সহিংসতা উপেক্ষা করে শক্তি সঞ্চয় করে অপ্রতিরোধ্য সাহস গড়ে তোলবার অপেক্ষা ৷ হিজরত অত্যন্ত শক্তভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা’আলার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে। মুসলিমরা কেবল কোনো নির্দিষ্ট জমিন বা সময়ের জন্য নয়, এটাই হলো এর মূল শিক্ষা।

যেসকল মুসলিমরা সহিষ্ণুতার পাশাপাশি নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হন, হিজরত তাদের জন্য নতুন কোনো স্থানে স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনে উদ্বুদ্ধ করে। মহান আল্লাহ তা’আলা কুরআনে বলেছেন, ‘যারা নির্যাতিত হওয়ার পর আল্লাহর জন্যে গৃহত্যাগ করেছে, আমি অবশ্যই তাদেরকে দুনিয়াতে উত্তম আবাস দেব এবং পরকালের পুরস্কার তো সর্বাধিক; হায়! যদি তারা জানত।’ (সূরা নাহল: ৪১)

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করে হাজারো মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন ৷ আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাও জানাতে পারেন ৷ নিচের কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন নির্দ্বিধায় ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন ৷ আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন ৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান ৷

রাসূলুল্লাহ সা. এর হিজরত ও আমাদের শিক্ষা
রাসূলুল্লাহ সা. এর হিজরত ও আমাদের শিক্ষা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *