স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় | স্মরণশক্তি বৃদ্ধির সহজ উপায়

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় | স্মরণশক্তি বৃদ্ধির সহজ উপায়

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ! প্রিয় পাঠক! কেমন আছেন? সুস্থ ও ভালো থাকুন এই দুআ করি ৷ আজ কথা বলবো স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর সহজ উপায় নিয়ে ৷ অনেকেই জানতে চান বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় ৷ আবার কেউ খোঁজেন কি খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে? শিশুর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির খাবার কী? বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির খাবার ৷ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় ৷ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় ইসলাম এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার ঔষধ ৷ বিস্তারিত আলোকপাত করবো ইনশাআল্লাহ ৷ সঙ্গেই থাকুন ৷

আরও পড়ুনঃ প্রতিভা বিকাশে শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় | স্মরণশক্তি বৃদ্ধির সহজ উপায়

স্মরণশক্তি কীভাবে বাড়ানো যায়, কীভাবে সুসংহত করা যায়, বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণার শেষ নেই। বিজ্ঞান বলছে, মনের গভীর একাগ্রতাই স্মরণশক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, বুদ্ধিমত্তা বিকাশের ধারাকে সহজতর করে। বুদ্ধিমত্তার সাথে জন্মগত বা জেনেটিক একটি বিষয় জড়িত আছে ঠিকই, এক্ষেত্রে পরিবেশের অবদানও কম নয়। সুন্দর পরিবেশ মনকে সতেজ করে, নানাভাবে বুদ্ধিবৃত্তি বিকাশের ধারাকে উদ্দীপ্ত করে।

খুব মনোযোগের সাথে যা শেখা হয়, স্মৃতির পাতায় তার ছাপ হয় দৃঢ়, ব্রেনের তথ্য লিপিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়াটি হয় দীর্ঘস্থায়ী। ফলে সহজেই ‘অনেক পড়া’ বা তথ্য দীর্ঘদিন মনে রাখা যায়। গবেষণার ফলে দেখা গেছে, মনোযোগী ছাত্র-ছাত্রীরাই ভাল রেজাল্ট করে। গুরুজনরা বলে থাকেন মন দিয়ে পড়, চোখ-কান খোলা রেখে শেখো।’ এই বাক্যটি কেবলমাত্র গুরুজনদের সাদামাটা উপদেশ নয়, এখানেও লুকিয়ে আছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানীরা সেই লুকোনো সত্যের সন্ধান পেয়েছেন। তার আগে জানতে হবে মন কী?

সাধারণত বুকের বামদিকে আলতো করে হাত রাখি আমরা। বলি, এইতো এখানে মন। এটাই কিন্তু সত্য নয়। বুকের বামদিকে আছে হৃদপিণ্ড বা হার্ট। মন হচ্ছে ব্রেনেরই অংশ, যা চিন্তা-চেতনা, অনুভূতি-আচরণ ও বুদ্ধিবৃত্তির সাথে সম্পৃক্ত। বিষয়বস্তুর ওপর মন নিমগ্ন করার অর্থ বা মনোযোগী হওয়ার মূল সূত্রই হচ্ছে শিক্ষণীয় ‘পড়ার’ সাথে ব্রেনের কার্যক্রমকে সুদৃঢ় বন্ধনে ধরে রাখা, চালিত করা। স্মৃতির ভিতকে দৃঢ় করতে চোখও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিজ্ঞানের যুগে অডিও-ভিডিও শব্দগুলোর সাথে আমাদের পরিচিতি দিন দিন বাড়ছেই। কানে শোনা, চোখে দেখা, দেখা ও শোনার মাধ্যম যদি মিল ঘটিয়ে কিছু শেখা যায়, দীর্ঘ দিন মনে থাকে, স্মরণ করা যায় সহজে। চোখের সঙ্গে ব্রেনের রয়েছে সরাসরি সংযোগ। চোখ দৃশ্যমান বন্ধুর ছবি ধারণ করে, ইমেজ সৃষ্টি করে। ইমেজকে বিশ্লেষণ করে ব্রেন। প্রকৃত অর্থে বিশ্লেষণের কারণেই আমরা বস্তুটিকে দেখতে পাই।

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় | স্মরণশক্তি বৃদ্ধির সহজ উপায়
স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় | স্মরণশক্তি বৃদ্ধির সহজ উপায়

অনেকের জন্য মনে রাখতে পারাটা খুব কঠিন কাজ। কোনভাবেই মুখস্থ হতে চায় না পড়া। যদি বা মুখস্থ হলো, তো পরীক্ষার খাতায় লিখতে গিয়ে কিংবা ক্লাসে টিচারের কাছে পড়া বলতে গিয়ে গুলিয়ে ফেলে অনেকেই। মনে রাখতে চাই স্মরণশক্তি। স্মরণশক্তি সবারই আছে। কারও কম, কারও বেশি। এই স্মরণশক্তি কিভাবে বাড়ানো যায়, শাণিত করা যায়, তারই নানা কৌশল নিয়ে লিখেছেন বড়রা। আর একটি উপদেশ প্রায় দিয়ে থাকেন,

খেলার সময় খেলা, পড়ার সময় পড়া’।

উপদেশটি শুনতে শুনতে গা-সওয়া হয়ে গেছে, তেমন পাত্তাই দিতে চাই না আমরা, তাই না? কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই উপদেশটিও বিজ্ঞানের মূল সূত্রের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। গুরুজনরা হয় সেই সত্যটুকু জানেন না ।

দৈনন্দিন জীবনে আমাদের চাওয়া-পাওয়া, ব্যর্থতা, হতাশা বা বন্ধুদের সাথে ঝগড়া কথা কাটাকাটি ইত্যাদি যদি সব সময় মনের ভিতর ঘুরঘুর করতে থাকে তাহলে যো নতুন তথ্য সহজেই ধারণ করতে পারে না। তথ্যই যদি লিপিবদ্ধ না থাকে তবে স্মরণশক্তি বাড়বে কিভাবে?

ফলে ক্লাসে পড়া বলতে গিয়ে আটকে যেতে হয়, পরীক্ষার খাতায় লিখতে গিয়ে চুল টানতে ইচ্ছা করে- পরিণতিতে খারাপ রেজাল্ট ….. বকাঝকা……. সব কিছুতে আস্তে আস্তে সবার অজান্তে পিছিয়ে যাওয়া। সবাই বলবে, ছেলেটির মেরিট ভাল না, বুদ্ধি কম। এই অপবাদের বোঝা সহজেই দূর করা যায়-টেবিলে পড়তে বসে যদি চারপাশের সব চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে বইয়ের সাথে মনকে একাত্ম করা যায় তাহলে শিখতে সময় লাগে কম, স্মরণশক্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়, বুদ্ধিমত্তা হয় শাণিত।

টিভি চ্যানেল স্টার স্পোর্টস-এর কারণে প্রতিদিনই আমরা ক্রিকেট খেলা দেখছি, ফুটবল খেলা দেখছি। অনেকেই ক্রিকেটার হতে চাই, চাই না? বিখ্যাত ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার বলেছেন,

একজন দক্ষ ব্যাটসম্যান হতে হলে প্রতিটি বলের প্রতি মনের সূক্ষ্ম যোগাযোগ সৃষ্টি করতে হবে, তীক্ষ্ণ চোখে বলটি পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে।

এই বাক্যটির ভিতরও কিন্তু বিজ্ঞান লুকিয়ে আছে, লুকিয়ে আছে মন ও চোখ। যে যত বেশি মনোযোগী হতে পারবে, কী লেখায়, কী পড়ায়, কী চিত্রাঙ্কনে, গানে কিংবা আবৃত্তিতে সে তত বেশি সফল হবে, জয়ী হবে।

স্মৃতিশক্তি ধারালো করার কিছু কৌশল

উইলিয়াম জেমস নামক একজন বিজ্ঞানী বলেছেন, ‘স্মৃতি হচ্ছে পেশীর মতো। নিয়মিত ব্যায়াম করলে পেশী হয় সদৃঢ়, পুরুষ্ট। স্মৃতিকেও তেমনি ধারালো ও সতেজ রাখা যায় নিয়মিত পরিচর্চার মাধ্যমে।

যা শেখা হচ্ছে, কেবলমাত্র গড়গড় করে মুখস্থ করে গেলেই চলবে না। একটু নেড়ে চড়ে দেখতে হবে কী শিখলাম, দেখতে হবে যা পূর্বেই জেনেছি তার সাথে নতুন শিক্ষণীয় তথ্যের কোন মিল আছে কিনা। এই প্রক্রিয়াটিকে ইংরেজিতে বলে Elaborative rehearsal. বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ধরা যাক শিখলাম, মৌলিক রং তিনটি লাল, নীল, সবুজ। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই হয়ত শব্দ তিনটি মুখস্থ হয়ে গেল। পরের দিন যদি প্রশ্ন করা হয় মৌলিক রং কি কি দেখা যাবে হয়ত লাল, নীল, সবুজের সাথে হলুদ, সাদা এসেও ভিড় জমাচ্ছে, উত্তর দেয়া হচ্ছে না।

কিন্তু যদি এভাবে শিখি, যদি এভাবে শেখার সময় মনে মনে চিন্তা করি। লাল সূর্যের রং লাল। নীল আকাশের রং নীল। সবুজ গাছ-গাছালির রং সবুজ। তবে একমাস পরও যদি মৌলিক রং সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হয়, সহজেই উত্তর বেরিয়ে আসবে। এ ক্ষেত্রে সূর্য, আকাশ, গাছ-গাছালি কিউ (cue) হিসাবে কাজ করবে।

সূর্যের কথা মনে আসার সাথে সাথে লাল রঙের কথা ভেসে উঠবে চোখের সামনে, আকাশের দিকে চোখ পড়লে নীল রঙের কথা মনে পড়বে, গাছ-গাছালির দিকে তাকালে সবুজ রঙের কথা স্মরণ করা সহজতর হবে।

সঠিক সময়ের কাজ নির্দিষ্ট দিনেই করতে হবে। আজকের পড়া আগামী দিনের জন্য জমিয়ে রাখা যাবে না। প্রবাদ আছে, সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়। খুবই সত্যি প্রবাদ এটি। একসাথে বেশি পড়া শিখতে গেলে স্মৃতির ভিত নড়বড়ে হয়ে যায়।

বার বার পড়তে হবে, জানা থাকলেও বার বার আবৃত্তি করতে হবে। মনে আছে এমন বিষয় পর পর কয়েকবার রিহার্সেল দিতে পারলে স্মৃতির ভাণ্ডারে স্থায়ী আসন পেতে বসে, সহজেই উড়ে যেতে পারে না, মগজের বিশেষ বিশেষ স্থানে গাঠনিক কিছু পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলে। এই পরিবর্তন সুদূরপ্রসারী ফল দেয়।

শেখার পর লেখার চর্চা করতে পারলে খুবই লাভ। অথবা লিখে লিখেও শেখার চেষ্টা করতে পারাটাও গুরুত্বপূর্ণ। শেখা বিষয় থেকে প্রশ্ন তৈরি করে মনে মনে উত্তর আওড়াতে সময় ব্যয় করে খুবই ভাল ফলাফল করা যায় ।

মনে রাখার আর একটি সহজ উপায় হচ্ছে ছন্দবদ্ধ করে শেখা। আমরা ছড়া শিখি, গান শিখি, কবিতা শিখি। একলাইন মনে আসার সাথে সাথে ছন্দের জটিল বিষয়বস্তুকে যদি সুসংগঠিত (Organised) করে শেখা যায় তবে অনায়াসে স্মরণ করা সম্ভব। কিছু শেখার পর ঘুমাতে পারলে ভাল ফল পাওয়া যায়। শিক্ষণীয় বিষয়গুলো তখন কোনরকম জুট ঝামেলা ছাড়াই আসন গেঁড়ে নিতে পারে স্মৃতির পাতায় । সবার ওপরে মন। তাই থাকতে হবে মনের একাগ্রতা, অদম্য ইচ্ছা এবং দৃঢ়তা । তবেই স্মৃতির ভিত হবে উন্নততর, পুষ্টিসমৃদ্ধ সমুজ্জ্বল।

মেধা বাড়ানোর উপায়

পরীক্ষায় ফল প্রকাশ হবার পর দৈনিক পত্রিকাগুলোতে থাকে মেধা তালিকায় স্থান লাভকারী ছাত্র-ছাত্রীদের সাক্ষাৎকার ও ছবি। সাক্ষাৎকার পড়লে দেখতে পাবে তাদের সফলতার পেছনে কোন গোপন রহস্য নেই কিংবা কেউ যাদুমন্ত্রের জোরেও মেধা তালিকায় স্থান লাভ করতে পারে না। সবাইকে করতে হয়েছে কঠোর পরিশ্রম। প্রতিটি মুহুর্তের মূল্য দিতে পেরেছে বলেই তারা কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করতে সক্ষম হয়েছে।

বাফেন নামক একজন মনীষী বলেছেন, প্রতিভা মানে বিরাট ধৈর্য। কথায় আছে সবুরে মেওয়া ফলে। তার মানে এই নয় যে হাত গুটিয়ে বসে থাকলেই প্রতিভার বিকাশ ঘটবে। মনোযোগ দিয়ে নিয়মমাফিক লেখাপড়া করলে দু’এক বছর পর অবশ্যই অবস্থার পরিবর্তন হবে। এক্ষেত্রে মনোবল সব সময় চাঙ্গা রাখতে হবে। কখনোই নিজের উপর আস্থা হারালে মেধার বিকাশ হবে না। আস্তে আস্তে অগ্রগতি হতে হতে একদিন দেখা যাবে ক্লাসের বোকা ছাত্রটির ক্রমিক নম্বর তরতর করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তোমার অন্যান্য বন্ধুবান্ধবীর দিকে দৃষ্টি দিলেই তুমি ব্যাপারটার সত্যতা বুঝতে পারবে। কেননা পরীক্ষা সব সময় একজন প্রথম হয় না। অন্য কেউ চেষ্টা করলে প্রথম স্থানটি দখল করতে পারে।

বিশিষ্ট দার্শনিক ভলতেয়ার বলেছেন, “প্রতিভা বলতে কিছু নেই। পরিশ্রম ও সাধনা করে যে কেউ প্রতিভাবান হতে পারে।” তাঁর এই বাণী থেকেও একথা বুঝতে অসুবিধে হয় না যে চেষ্টা করলে সবার পক্ষেই প্রতিভা অর্জন করা সম্ভব। কেননা কেউ প্রতিভাবান হয়ে জন্ম লাভ করে না। নিয়মনিষ্ঠভাবে পড়াশুনা করলে বোকা ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছাত্রটিও একদিন মেধাবী হিসেবে খ্যাতি লাভ করতে পারে।

বিশিষ্ট জ্ঞানী ব্যক্তি ফ্রান্সিস বেকন বলেছেন, “প্রত্যেক মানুষের মধ্যে সম্ভাবনাময় প্রতিভা লুকিয়ে আছে। সকলের উচিত সেই সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তোলা।” তাঁর এই বক্তব্য থেকে এটা পরিষ্কার ভাবে বুঝতে কারো কষ্ট হবার কথা নয় যে, ক্লাসে যারা খারাপ ছাত্র হিসেবে অবজ্ঞার শিকার, তারা একটু তৎপর হলেই সকলের ধারণা মিথ্যে প্রমাণ করতে পারে। কেননা যে ক্লাসে প্রথম হচ্ছে তার এমন কোন বাড়তি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নেই যা দিয়ে পরীক্ষায় অধিক নম্বর পায়। ক্লাসের প্রথম হওয়া ছাত্রটি নিয়মিত সঠিক নিয়মে পড়ালেখা করে বলেই সে পরীক্ষায় ভাল করতে সক্ষম হচ্ছে। তার মত তুমিও যদি মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা কর তাহলে তুমি অবশ্যই তার কাছাকাছি যেতে পারবে।

তুমি যদি কঠোর পরিশ্রম কর তবে প্রথম হওয়া ছাত্রটিকে ডিঙ্গিয়ে যাওয়াও তোমার কাছে অসম্ভব কোন ব্যাপার নয়। কেননা তুমি যদি পরীক্ষার খাতায় তার তুলনায় ভালভাবে প্রশ্নের উত্তর লিখতে পার তবে তা অবশ্যই সম্ভব হবে। এজন্য তোমাকে সেভাবে প্রস্তুত হতে হবে। অযথা সময় নষ্ট না করে সময়ের সদ্ব্যবহার করলে তুমি শুধু ক্লাসেই প্রথম হবে না বোর্ডের পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান করে নেয়াও তোমার জন্য সহজ হয়ে যাবে। ব্যাপারটা তোমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে কি? প্রথমাবস্থায় হতে পারে। তবে প্রথম হওয়া অলৌকিক কোন ঘটনা নয়। চেষ্টা করলে মানুষের অসাধ্য কিছুই নেই। ধৈর্য সহকারে লেখাপড়া করলে তোমার আশা সফল হবেই। কারণ যারা মেধা তালিকায় স্থান লাভ করে তারা তোমার মতই ছাত্র বা ছাত্রী। তাকেও আস্তে আস্তে পড়ালেখায় উন্নতি করতে হয়েছে। অতএব নিজেকে কখনো ছোট ভেবে মন খারাপ করবে না।

বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায়

ডিম– ডিমকে প্রোটিনের সবচেয়ে ভালো উৎস মনে করা হয়। প্রতিদিন ডিম খেলে বাচ্চাদের মস্তিষ্কের বিকাশ সম্ভব হয়। ডিমে উপস্থিত কোলিন মস্তিষ্কের কার্যকরিতা বৃদ্ধি করে।

আখরোট- এতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। এই আখরোট দেখতেও মস্তিষ্কের মতোই। প্রতিদিন ১টি আখরোট খেলে মস্তিষ্ক দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারে। পাশাপাশি এই শুকনো ফলটি স্মৃতিশক্তি ভালো করে অবসাদ দূর করতেও সাহায্য করে।

সবুজ শাকসবজি- একটি গবেষণা অনুযায়ী সবুজ শাকসবজি স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা দূর করে। সবুজ শাকপাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, প্রোটিন, ফোলেট ও বিটা ক্যারোটিন উপস্থিত থাকে, যা মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে উপকারী।

দেশী ঘি- প্রতিদিন সকালে শিশুকে খাবারের সঙ্গে এক চামচ ঘি দেওয়া উচিত। এই ঘি বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি মজবুত করতে সাহায্য করে।

চিয়া বীজ- এই বীজে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের জন্য অত্য উপকারী। রাতে এক চামচ চিয়া বীজ জলে ভিজিয়ে রেখে দিন। পরের দিন সকালে সেই জল পান করলে স্মৃতিশক্তি বাড়তে পারে।

আভাকাডো- মস্তিষ্কের কার্যকরিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে আভাকাডো। এতে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট উপস্থিত, যা মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। এতে উপস্থিত ওলিক অ্যাসিড মাইলিনকে নিরাপত্তা প্রদান করে।

মাইলিনের সাহায্যে মস্তিষ্ক ২০০ মাইল প্রতিঘণ্টা বেগে সূচনা পৌঁছে দিতে পারে। এই ফলে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকে, যা বাচ্চাদের উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি কম করে।

ওটস- আবার ওটস খাওয়ালেও বাচ্চাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। ওটসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, জিঙ্ক, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকে। এতে উপস্থিত ফাইবার শিশুর শরীরে শক্তি জোগায়।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার ঔষধ

আমরা লক্ষ্য করেছি যে অনেকেই ইন্টারনেটে স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ঔষধের নাম খুঁজে বেড়াচ্ছেন। আপনি যদি ঔষধ এর মাধ্যমে আপনার মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে চান তাহলে হোমিওপ্যাথি এবং এলোপ্যাথিক উভয় ধরনের ওষুধ খুঁজে পাবেন। তবে ঔষধের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি বাড়ানো মোটেই কাম্য নয়।

কি খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে

আপনি যদি আপনার মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে চান এবং বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এর পাশাপাশি মস্তিষ্ক সুস্থ রাখার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। এখন আমরা জানবো কি কি খাবারের মাধ্যমে আপনি আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে পারেন। সম্পন্ন খাবার তালিকাটি আমরা নিচে শেয়ার করলাম।

১। আখরোট

২। মাছ

৩। কফি

৪। ডিম

৫। ব্রাহ্মি শাক

৬। কাঠ বাদাম

৭। কাজু বাদাম

৮। কিসমিস

৯। কলা

১০। পেঁপেঁ

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির দোয়া

রাসুল (সা.)-এর কাছে জিবরাইল (আ.) ওহি নিয়ে আসতেন। তিনি তার সঙ্গে ওহি পড়া ও মুখস্ত করার চেষ্টা করতেন, যা তার জন্য অনেক ক্ষেত্রে কষ্টকর ছিল।

তখন এ আয়াত নাজিল হয় এবং রাসুল (সা.)-এর কষ্টও কিছুটা লাঘব হয়। তিনি ওহি আয়ত্ত করতে প্রশান্তি লাভ করেন।

আল্লাহ বলেন- فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ وَلَا تَعْجَلْ بِالْقُرْآنِ مِن قَبْلِ أَن يُقْضَى إِلَيْكَ وَحْيُهُ وَقُل رَّبِّ زِدْنِي عِلْمًا –
অর্থাৎ সত্যিকার মালিক আল্লাহ মহান। আপনার প্রতি আল্লাহর ওহী সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে আপনি কোরআন গ্রহণের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করবেন না এবং বলুন, হে আমার পালনকর্তা! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন। (সুরা ত্বাহা, আয়াত ১১৪)

দোয়া

رَبِّ زِدْنِي عِلْمًا

উচ্চারণ- রাব্বি জিদনি ইলমা। অর্থ— হে আমার পালনকর্তা! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।

এই দোয়া নিয়মিত পাঠ করলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি লাভ করে।

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করে হাজারো মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন ৷ আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাও জানাতে পারেন ৷ নিচের কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন নির্দ্বিধায় ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন ৷ আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন ৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান ৷

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় | স্মরণশক্তি বৃদ্ধির সহজ উপায়
স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় | স্মরণশক্তি বৃদ্ধির সহজ উপায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *