তাওবার নামাজ পড়ার নিয়ম | তাওবার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত

তাওবার নামাজ পড়ার নিয়ম | তাওবার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত

আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ ৷ সুপ্রিয় পাঠক! সবাই ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা নিন ৷ আশা করছি আপনাদের দিনকাল অনেক ভালো কাটছে ৷ আজ আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিকে কথা বলব ৷ আমরা মানুষ ৷ আমরা গুনাহ করতে পছন্দ করি ৷ ভুল করতে ভালবাসি ৷ অন্যায় করা আমাদের নিত্যদিনের কাজ ৷ কিন্তু একজন মুমিন ভুল করে, অন্যায় করে নিরব থাকতে পারে না ৷ নীরব থাকা উচিত নয় ৷ ইচ্ছাকৃত ভুল বারবার করাও কাম্য না ৷ ভুল থেকে ফিরে আসা দরকার ৷ অন্যায় থেকে নিজেকে মুক্ত করা দরকার ৷ এজন্য রয়েছে তাওবা ৷ আজ আমরা কথা বলব তাওবার নামাজ পড়ার নিয়ম ৷ তাওবার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত সম্পর্কে ৷ সালাতুত তাওবা কী? ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করবো ইনশাআল্লাহ ৷

আরও পড়ুনঃ সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণসহ

তাওবার নামাজ পড়ার নিয়ম | তাওবার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত

মানুষ আল্লাহর সেরা সৃষ্টি। শুধু সেরা সৃষ্টিই নয় বরং সবচেয়ে প্রিয় সৃষ্টি হলো মানুষ। আল্লাহ্ মানবজাতিকে অনেক ভালোবেসে তার দাসত্ব বা গোলামী করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। প্রতিনিয়ত তার কোনো না কোনো গুনাহ হয়ে থাকে। মানুষের পাহাড়সম গুনাহ হয়ে গেলেও ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। তার দোষ-ত্রুটি গোপন রেখে তাকে করেন নিরাপদ। আর আল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার অন্যতম প্রধান মাধ্যম তাওবা ৷ তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা আল্লাহর কাছে খুবই পছন্দনীয় ইবাদত। তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর কাছে বারবার মুখাপেক্ষী হয়। আর বান্দার মুখাপেক্ষীতা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয়। তাছাড়া সালাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে তাওবা করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

তাওবার নামাজ পড়ার নিয়ম
তাওবার নামাজ পড়ার নিয়ম

শুদ্ধ জীবনের জন্য তাওবার নামাজ

সালাতুত তাওবা মূলত পাপ থেকে মুক্তি লাভের উদ্দেশ্যে যে সালাত আদায় করা হয়। সেটাই সালাতুত তাওবা। তাই তাওবার উদ্দেশ্যে দুই রাকাআত বা চার রাকাআত সালাত আদায় করা যেতে পারে। অথচ ফরয সালাতের পর ও তাওবা করা যায়। মূলতঃ সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে অনুগ্রহ প্রাপ্তির লক্ষ্যে অনুতপ্ত প্রকাশই মূল উদ্দেশ্য।

তাওবার নামাজ সম্পর্কে কী বলেছেন বিশ্বনবি?

এ সম্পর্কে প্রিয় নবি (সা.) বর্ণিত হাদিস ৷ ”হযরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোনো পাপ করাবে তারপর উঠে (ওযু-গোসল) আবশ্যক পবিত্রতা লাভ করবে এবং কিছু নফল নামায পড়বে, তারপর আল্লাহর কাছে কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোনো মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের ওপর যুলুম করে ফেললো আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ্ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবেন? তারা নিজের কৃতকর্মের জন্য হঠকারিতা দেখায় না এবং জেনে শুনে তাই করতে থাকে না। তাদেরই জন্য প্রতিদান হলো তাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে প্রস্রবন ৷ যেখানে তারা থাকবে অনন্তকাল। যারা কাজ করে তাদের জন্য কতই না চমৎকার প্রতিদান।” (সুনানে তিরমিযী-৪০৬)

তাবরানী কাবিরে ‘হাসান’ সনদে আবুদ্দারদা (রা.) থেকে মারফু’ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, উক্ত সালাত দুই বা চার রাকাআত ফরয কিংবা নফল, পূর্ণ ওযু ও সুন্দর রুকু-সাজদা সহকারে হতে পারে। (মুসনাদে আহমাদ-২৭৫৮৬)

বিশেষ দোয়া : তওবার জন্য নিচের দু’আটি বিশেষভাবে সাজদায় ও শেষ বৈঠকে সালাম ফিরানোর আগে পড়া উচিত।

اسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ.

অর্থাৎ, “আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি সেই আল্লাহর নিকটে যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। তিনি চিরগীব ও বিশ্ব চরাচরের ধারক এবং তাঁর দিকেই আমি প্রত্যাবর্তন করছি বা তাওবা করছি।” (মিশকাত, হাদিস : ২৩৫৩)

তাওবা কবুলের শর্তাবলী

ইসলামি শরিয়াহ মতে, বান্দা তাওবা করলে আল্লাহ তা গ্রহণ করেন। অবশ্য সেটা হতে হবে আন্তরিক। আর মানুষের কর্তব্য হলো, সে সকল প্রকার পাপ থেকে তাওবা করবে, যা সে করেছে। আলেমগণ এ বিষয়ে একমত যে, যদি কোন ব্যক্তি তার কৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত না হয় বা তা পরিত্যাগের ইচ্ছা না করে তাহলে তার মৌখিক তাওবা উপহাস ছাড় কিছুই নয়। মৌখিক তাওবা প্রকৃত তাওবা নয়। আন্তরিক তাওবার কিছু শর্ত রয়েছে। তাওবার শর্তসমূহ পূরণ করে তাওবা করছে গুনাহ করার আগে আল্লাহর কাছে বান্দার যে মর্যাদা ছিল, তাওবা করার পর তার মর্যাদা পূর্বাপেক্ষা আরো বাড়ে ৷

এ প্রসঙ্গে কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা সকলেই মিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করো, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে। (সূরা নূর-৩১)।

তাওবার নামাজের নিয়ম
তাওবার নামাজের নিয়ম

জেনে রাখা দরকার যে, তাওবার জন্য কতিপয় শর্ত রয়েছে। এসকল শর্ত পূরণ সাপেক্ষে কেবল তাওবা কবুল হতে পারে, অন্যথায় নয়। পাপ বা অপরাধ দু’ধরনের বিবেচনায় তাওবার শর্তাবলি ও দু’ধরনের থাকে। যেমন-

১. আল্লাহর হক বিনষ্টের অপরাধে তাওবা :

যে সকল পাপ শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার হক বা অধিকার সম্পর্কিত। যেমন-শিরভ করা, সালাত আদায় না করা, মদ্যপান, ব্যভিচার ও সুদের লেনদেন করা ইত্যাদি। এ জাতীয় পাপ থেকে আল্লাহর কাছে তাওবা ক্ষমা প্রার্থনা করার সাথে তিনটি শর্তের উপস্থিতি আবশ্যক। যথা-

  • ১ম শর্ত: তৎক্ষণাৎ গুনাহ হতে বিরত থাকা।
  • ২য় শর্ত গুনাহের জন্য লজ্জিত বা অনুতপ্ত হওয়া
  • ৩য় শর্ত : পুনরায় উক্ত গুনাহ না করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা।

২. বান্দার হক বিনষ্টের অপরাধে তাওবা:

যেসকল পাপ বা অপরাধ মানুষের হক বা অধিকার সম্পর্কিত। যেমন-সম্পদ আত্মসাৎ, জুলুম-অত্যাচার, চুরি-ডাকাতি, ঘুষ খাওয়া ইত্যাদি। এ প্রকার পাপ থেকে তাওবা করার শর্ত হলো মোট চারটি। যথা-

  • ১ম শর্ত: তৎক্ষণাৎ শুনাহ হতে বিরত হওয়া ৷
  • ২য় শর্ত: গুনাহের জন্য লজ্জিত বা অনুতপ্ত হওয়া ৷
  • ৩য় শর্ত : পুনরায় উক্ত গুনাহ না করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা।
  • ৪র্থ শর্ত : সম্ভব হলে যার অধিকার হরণ করা হচ্ছে তার সাথে বিষয়টি সুরাহা করে নেয়া।

পাপমুক্তি ও আত্মশুদ্ধির নামাজ

হজরত আবু বকর (রা.) বলেন, আমি রাসূল (সা.)কে বলতে শুনেছি- যখন কেউ গোনাহ করার পর সুন্দরভাবে ওজু করে (জায়নামাজে) দাঁড়িয়ে যায় এবং দু’রাকাত সালাত আদায় করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তখন নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন। (আবু দাউদ-১৫২১)।

তাওবার নামাজের আরবি নিয়ত

نويت ان اصلي لله تعالى ركعتي صلاة التوبه سنة رسول الله تعالى متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر

বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তাআ-লা-রাক আতাই ছলা-তিত তাওবাতি সুন্নাতু রাসূলিল্লা-হি তাআলা- মুতাওয়া জ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

তাওবার নামাজের বাংলা নিয়ত

আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকআত তাওবার নামাজ আদায় করার নিয়ত করছি, আল্লাহ আকবার।

তাওবার নামাযের নিয়ম ও নিয়ত বাংলা উচ্চারণ-tawbah namaz niyat bangla

তাওবা করা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (সা.) সর্বদা তাওবা করতেন। তাই তাওবা করা মুনিরে প্রতি অত্যাবশ্যক। তাওবার মাধ্যমে মানুষের অতীত গুনাহ মাফ হয়, সে আল্লাহর ভালোবাসপ্রাপ্ত হয়। সর্বোপরি তাওবার মাধ্যমে ইহকাল ও পরকালের অফুরন্ত মঙ্গল লাভ করা যায়।

তাওবার ফযিলত সম্পর্কে

১. তাওবায় পাপরাশি ক্ষমা হয়:

তাওবার সবচেয়ে বড় উপকারিতা বা ফযিলত হচ্ছে এর মাধ্যমে গুনাহ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া ৷ আল্লাহ বলেন, “আপনি বলে দিন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর অত্যাচার করেছো, তোমরা আল্লাহ তা’আলার রহমত হতে নিরাশ হয়ো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ যাবতীয় পাপ ক্ষমা করবেন। নিশ্চয়ই তিনি বড়ই ক্ষমাশীল, দয়ালু।” (সূরা যুমার-৫৩)

২. তাওবার আল্লাহর ভালোবাসা লাভ:

তাওবার মাধ্যমে মহান আল্লাহর ভালোবাসা লাভ করা যায়। মহান আল্লাহ তাওবাকারীকে ভালোবাসেন । মহান আল্লাহ বলেন,”নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।” (সূরা বাকারা, ২২২)।

৩. ইহকাল ও পরকালে সাফল্য অর্জন :

তাওবা দ্বারা একজন বান্দা ইহকাল ও পরকালে সফলকাম হয়। মহান আল্লাহ বলেন, “হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।” (সুরা নূর-৩১)

৪. পাপরাশিকে নেকী দ্বারা পরিবর্তন করে দেয়া:

বান্দা যখন তার অপরাধ বুঝতে পেরে সত্যিকার তাওবা করে, তখন মহন আল্লাহ কেবল তার গুনাহকেই ক্ষমা করবেন না; বরং পাপরাশিকে নেকী দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। বান্দাহ মহান আল্লাহর বাণীকে একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুক, তাকে আল্লাহ তা’আলা কী সু-সংবাদ প্রদান করেছেন- “তবে যে তাওবা করে, ইমান আনে এবং সৎকর্ম করে। পরিণামে মহান আল্লাহ তাদের গুনাহগুলোকে নেকী দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা ফুরকান-৭০)

৫. তাওবা দ্বারা জান্নাত লাভ:

তাওবা জান্নাতে প্রবেশের কারণ হয়। মহান আল্লাহ তাওবাকারীদের পাপ ক্ষমা করবেন এবং তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
“হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাঁটি তাওবা, আশা করা যায় তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের পাপরাশি মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত।”(সূরা তাহরীম-৮)

৬. উত্তম জীবন উপকরণ প্রদান:

তাওবাকারীকে মহান আল্লাহ ইহকালে উত্তম ভোগ উপকরণ দান করবেন। আর তার ইবাদত ও আনুগত্য অনুযায়ী তাকে প্রতিদান দেবেন। আল্লাহ তা’আলা মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে কারীমে ইরশাদ করেন, “আর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার নিকট ক্ষমা চাও। তারপর তার কাছে ফিরে যাও, (তাহলে) তিনি তোমাদেরকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত উত্তম ভোগ উপকরণ দেবেন।” (সূরা হুদ ৩২ )

৭. আসমান থেকে সময়মত বৃষ্টি ও শক্তি দান :

মহান আল্লাহ বান্দার অপরাধের কারণে কখনো কখনো অনাবৃষ্টি, দুর্ভিক্ষ দিয়ে থাকেন। অতপর বান্দা তাওবা করলে তিনি তাদেরকে বৃষ্টি ও শক্তি দান করেন। মহান আল্লাহ মহাগ্রন্থ আল কুরআনে হুদ (আ.) এর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, হুদ তার সম্প্রদায়ের লোকদের বলছিল- “হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার নিকট ক্ষমা চাও অতঃপর তার কাছে তাওবা কর, তাহলে যিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি পাঠাবেন এবং তোমাদের শক্তির সাথে আরো শক্তি বাড়াবেন। আর তোমরা অপরাধী হয়ে বিদু হয়ো না।” (সূরা হুদ-৫২)

৮. দু’আ কবুল হয়:

মহান আল্লাহ তাওবাকারীর দু’আ কবুল করেন। আল্লাহ তা’আলা মহগ্রস্থ আল কুরআনে সালেহ (আ.) এর বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, সালেহ তার সম্প্রদায়ের লোকদের বলছিল, ‘আর সামূদ জাতির প্রতি (প্রেরণ করেছিলাম) তাদের ভাই সালিহকে। সে বলল, ‘হে আমার সম্প্রদায়। তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো ইলাহ নেই, তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে এবং সেখানে তোমাদের জন্য আবাদের ব্যবস্থা করেছেন । কাজেই তোমরা তাঁর নিকট ক্ষমা চাও, অতঃপর তারই কাছে তাওবা কর। নিশ্চয়ই আমার পালনকর্তা নিকটে, সাড়াদানকারী।

৯. তাওবায় যাবতীয় বিপদ-আপদ দূর :

তাওবার দ্বারা মহান আল্লাহ বান্দার বিপদ-আপদ দূর হয়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “আর আল্লাহ এমন নন যে, তাদেরকে আযাব দেবেন এ অবস্থায় যে, তুমি তাদের মাঝে বিদ্যমান এবং আল্লাহ তাদেরকে আযাব দানকারী নন এমতাবস্থায় যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করছে।” (সূরা আনফাল-৩৩)

১০. পেরেশানি দূর এবং রিযিক বৃদ্ধি :

তাওবা করলে মহান আল্লাহর বান্দার পেরেশানি দূর করে দেন এবং তার অবারিত রিজিক বাড়িয়ে দেন। হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তা’আলা তার সমস্ত পেরেশানিকে দূর করে দেয়, সকল বিপদ থেকে উদ্ধার করে এবং তাকে তার ধারণাতীত রিযিক দেন।” (সুনাহ ইবনে মাজাহ-৩৮১৯)

শেষ কথা

পরিশেষে বলতে পারি, তাওবার মাধ্যমে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। আর তাওবার মাধ্যমেই বান্দা মহান আল্লাহর কাছে প্রিয় হয়ে উঠে, তাদেরকে তিনি ভালোবাসেন। মানবজাতি স্বভাবতই পাপে নিমগ্ন হবে, এটা তার সহজাত প্রবৃত্তি। আবার জ্ঞান ফিরে আসলে আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থী হয়। আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। তবে গুনাহ বা অপরাধের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভের একমাত্র উপায় হচ্ছে আল্লাহর কাছে বিশুদ্ধ মনে তাওবা করে পরবর্তীকালের জন্য গুনাহ থেকে বিরত থাকার দৃঢ় সংকল্প করা। অতএব সালাতের মাধ্যমে তাওবা করে মুক্তির মিছিলে নিজেকে সমবেত করা প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য।

সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করে হাজারো মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন ৷ আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাও জানাতে পারেন ৷ নিচের কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন নির্দ্বিধায় ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন ৷ আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন ৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান ৷

তাওবার নামাজ পড়ার নিয়ম | তাওবার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
তাওবার নামাজ পড়ার নিয়ম | তাওবার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *