মে দিবসের কবিতা | শ্রমিক দিবসের ছড়া-কবিতা
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু সুপ্রিয় কবিতা প্রেমী পাঠক বৃন্দ আপনাদেরকে মহান মে দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ৷ আপনাদের জন্য শ্রমিকদের নিয়ে নিজের রচিত ছড়া-কবিতা নিয়ে হাজির হলাম ৷ দিন শেষে আমরা সবাই কিন্তু শ্রমিক ৷ কাজের ধরণ ভিন্ন ভিন্ন ৷ যারা লেখালেখি করে তাদের শব্দ শ্রমিক বলা যায় ৷ আর যারা সংগীত নিয়ে কাজ করেন তারা হলেন কণ্ঠ শ্রমিক ৷ এভাবে সবাই শ্রমিক ৷ শ্রমের বিনিময়কারীই শ্রমিক ৷
আরও পড়ুনঃ শ্রমিক দিবসের ইতিহাস
শ্রমিকরা আমাদেরই ভাই ৷ তাদের প্রাপ্য অধিকার বুঝিয়ে দেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ৷ শ্রমিকের হক নষ্ট করে কেবল পাপীষ্ঠ ৷ ঘৃণিত ব্যক্তি ছাড়া শ্রমিকের অধিকার ক্ষুণ্ন করতে পারে না ৷ এরা অসভ্য এবং নিকৃষ্ট কীট ৷
ইসলাম শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করেছে ৷ শ্রমের মর্যাদা দিয়েছে ৷ অলস বসে না থেকে নিজ হাতে উপার্জন করাকে ইসলাম উৎসাহিত করেছে ৷ শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করতে নির্দেশ দিয়েছে ৷
এটাও পড়ুনঃ মহান মে দিবসের তাৎপর্য ও শিক্ষা
শ্রমিকরাও মানুষ ৷ তাদের কর্ম নিয়ে কখনোই নিজেদের হীনমন্যতায় ভোগা উচিত না ৷ মোটাদাগে মিল ফ্যাক্টরিতে যারা কাজ করে ৷ বিভিন্ন কোম্পানীতে কর্মরত কর্মীদের শ্রমিক বলা হয় ৷ তাদের নিজেদের কর্মের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান থাকা উচিত ৷ শ্রমিক যদি কাজে ফাঁকি দেয় ৷ তবে এটা তার তুমুল অন্যায় হবে ৷ তার উপার্জন তখন প্রশ্নবিদ্ধ হবে ৷ হালাল হারামের প্রশ্ন দেখা দিবে ৷ যার যার দায়িত্ব তা পুরোপুরি পালন করা দরকার ৷
মে দিবসের কবিতা | শ্রমিক দিবসের ছড়া-কবিতা
শ্রমিক মালিক
—দীদার মাহদী
ঘাম ঝরানোর পূর্বে তাকে
দে শ্রমিকের মজুরটাকে
ন্যায্য পাওনা সবি,
তখন যে তুই এই সমাজে
ভালো মানুষ হবি ৷
কথায় কথায় ধমকে ওঠে
ক্ষেপে গিয়ে মারতে ছোটে
কাজের লোকের দিকে,
ছোটলোকের বাচ্চা তারা
দিতে পারি লিখে ৷
শ্রমিক মজুর তারাও মানুষ
একটু ভাবিস হারাস না হুঁশ
বুটের জুতো পরে,
পারোস দিতে ভালোবেসে
একটু আদোর করে ৷
শ্রমিক মালিক ভাই সকলে
ভালোবাসা রাখ দখলে
গহিন হৃদয় মাঝে,
প্রফুল্লতা আসবে তখন
কথায় এবং কাজে ৷
মে দিবসের কবিতা | শ্রমিক দিবসের ছড়া-কবিতা
শ্রমিকের গান
দী দা র মা হ দী
শুকানোর আগে আগে শ্রমিকের ঘাম
দিয়ে দাও বিনিময় ন্যায্য দাম
মনগড়া না চলে
ইসলাম যা বলে
তাতেই রয়েছে সুখ শান্তি আরাম |
হালাল রিজিক খোঁজা ফরজ হুকুম
শ্রমজীবী কাজ করে ঝেড়়ে ফেলে ঘুম
শ্রমিকের যা রুজি
হালাল তা বুঝি
বাদ যদি দিতে পারে সকল হারাম ||
ঘামঝরা টাকা যদি কেউ দেয় মেরে
বদ ভীরু কাপুরুষ যাবেই সে হেরে
ঠকায় যে তাকে
পরবে সে ফাঁকে
দুনিয়া ও আখেরাতে হবে বদনাম ||
ইসলামে শ্রমিকের অধিকার
দুনিয়ার জীবনের সামগ্রিক কার্যক্রম সুন্দরভাবে সম্পাদন করতে হলে সব শ্রেণি পেশার মানুষের প্রয়োজন রয়েছে। পৃথিবীতে কোনো মানুষ এ দাবি করতে পারে না আমি সব দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ফলে প্রত্যেক মানুষকেই অন্যের মুখাপেক্ষী থাকতে হয়। যার ফলে মালিক ও শ্রমিক শ্রেণির সৃষ্টি। শ্রমিককে যেমন তার আর্থিক অস্বচ্ছলতা দূর করার জন্য অন্যের অধীনে কাজ করতে হয় তেমনি সামর্থ্যবান মানুষদের নানামুখী প্রয়োজন ও কার্য সম্পাদনে শ্রমিকের মুখোমুখি হতে হয়।
ইসলাম শ্রমিকদের ব্যাপারে মালিক ও নিয়োগকর্তাদের অত্যন্ত ন্যায়ভিত্তিক, সহানুভূতিপূর্ণ এবং সৌভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক বজায় রাখার তাগিদ দিয়েছে বার বার। শ্রমিক নির্যাতন নৈতিক, ধর্মীয় এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। ইসলাম এ ব্যাপারে মানুষকে বারবার অত্যন্ত কঠোরভাবে সতর্ক করে দিয়েছে যেন প্রত্যেকে নিজ নিজ অধীনস্থদের সাথে ভালো ব্যবহার করে এবং তাদের উপর কোন প্রকার যুলুম-নির্যাতন না করে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুমিনদের নির্দেশ দিয়েছেন, “তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, তাঁর সাথে আর কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করো না, পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার করো, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, দরিদ্র, নিকট প্রতিবেশী, দূরের প্রতিবেশী, ভ্রমনের সহযাত্রী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাসদাসীর সাথে সদয় আচরণ করো। নিশ্চয় আল্লাহ দাম্ভিক, গর্বিত ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না।” (সুরা নিসা: ৩৬)।
অধীনস্থদের ব্যাপারে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট প্রত্যেক মানুষকেই জিজ্ঞাসিত হতে হবে। এ প্রসঙ্গে হযরত ইবন উমর (রা.) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা প্রত্যেকেই রাখাল বা রক্ষণাবেক্ষণকারী স্বরূপ এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে। শাসক তার লোকজনের রাখাল স্বরূপ, তাকে তার শাসিতদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। গৃহকর্তা তার গৃহবাসীর রাখাল স্বরূপ, তাকে তার গৃহবাসীদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে। দাস তার মনিবের সম্পদাদির রাখাল স্বরূপ, তাকে তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। মনে রাখবে, তোমাদের প্রত্যেকেই (কোন না কোনভাবে) রাখাল স্বরূপ এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” (সহিহ বুখারি: ২৫৫৮)। রাসুলুল্লাহ (সা.) অধীনস্থদের নিজেদের ভাই হিসেবে উল্লেখ করে তাদের অধিকারের ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তাদের উপর অতিরিক্ত কাজের বোঝা চাপিয়ে দিতেও নিষেধ করেছেন।
শেষ কথা
সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করে হাজারো মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন ৷ আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাও জানাতে পারেন ৷ নিচের কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন নির্দ্বিধায় ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন ৷ আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন ৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান ৷