কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত ৷ কুরবানী না করার পরিণাম

কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত ৷ কুরবানী না করার পরিণাম

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ ৷ সুপ্রিয় পাঠক! আপনারা সবাই ভাল আছেন ৷ আমাদের দোরগোড়ায় ঈদুল আযহা সমাগত ৷ আমরা ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত ৷ কোরবানি না করার পরিণাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করব ইনশাআল্লাহ ৷ আমাদের সাথেই থাকুন ৷ পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন ৷ আশা করছি ইলমে দীন অর্জন করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ ৷

আরও পড়ুনঃ দাড়ি রাখার হুকুম

ঈদুল আজহার তাৎপর্য

ঈদ মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব। বছরে দুটি ঈদ, ঈদুল ফিতর ও ঈদুর আজহা। ঈদ নিছক আনন্দ উৎসব নয়। চিত্ত বিনােদনের নামে হেসে-খেলে, আমােদ-প্রমােদে, ঘুরে-ফিরে, আড্ডায় মজে উদযাপিত কোনও দিবস নয়। ঈদ বান্দার প্রতি আল্লাহর রহমতের ফল্পধারা। প্রভুর নেয়ামত পেয়ে-খেয়ে হৃদয়ের গভীর থেকে বেরিয়ে আসা বান্দার কৃতজ্ঞতাবােধ।

নেয়ামতে নিমজ্জিত, ধর্মে-কর্মে উদ্ভাসিত, উচ্ছ্বসিত প্রাণের ঝলকিত হাসি ৷

দোরগােড়ায় ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা মু’মিনের ঈমানের পরীক্ষা। ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির প্রশিক্ষণ। ঈদের দিন পশু কুরবানির মধ্য দিয়ে নিজের পশুত্বকে বিলােপ করে মানুষ্যত্ববােধকে জাগিয়ে তােলা। আর হৃদয়ে ঈমানের কালি দিয়ে এঁকে দেওয়া ‘কুরবানি আত্মত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির এক বহতা নদী।’ এটাই ঈদুল আজহা উদ্যাপন ও কুরবানি করার ঈমানি দাবি। কুরআন-হাদিসের শিক্ষা। ধর্মের আবেদন। কুরবানি করা আল্লাহর আদেশ। এ আদেশ পালন করা ইবাদত। সামাজিক স্ট্যাটাস রক্ষার্থে কিংবা লােকিকতার ঘােরে আটকে পড়ে পশু যবেহ করা কুরবানির উদ্দেশ্য নয়।

উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং আত্মশুদ্ধি। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন—
لن ينال الله لحومها ولا دماؤها ولكن يناله التقوى منكم

অর্থ: আল্লাহর নিকট পৌছে না তাদের (কুরবানির পশুগুলাের গােশত, রক্ত এবং পৌছে তােমাদের তাকওয়া, নিয়ত, আল্লাহভীতি। (সূরা হাজ: ৩৭)

আরও পড়ুনঃ ঈদুল আজহার নামাজ পড়ার নিয়ম

কোরবানির গুরুত্ব ও তাৎপর্য

কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত ৷ কুরবানী না করার পরিণাম
কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত ৷ কুরবানী না করার পরিণাম

বান্দার কাছে আল্লাহর দাবি কি? দাবি এই যে, বান্দা শুধু আল্লাহকেই ভালবাসবে ৷ বান্দার কলবে শুধু আল্লাহর প্রতি মহব্বত থাকবে ৷ অন্য সবকিছুর মহব্বতের উপর বান্দা আল্লাহর মহব্বতকেই প্রাধান্য দিবে ৷ যখন বান্দার সামনে আল্লাহর মহব্বতে দাবি আসবে ৷ তখন অন্য মহাব্বত কে সে নির্দ্বিধায় কোরবান করে দেবে ৷ এমনকি যদি সে তোমার কলিজার টুকরা সন্তান হয় ৷ কেন নয়?

জীবনে তুমি যা কিছু পেয়েছো সব তো আল্লাহর দান ৷ তোমার সন্তান! তুমি কোথায় পেলে? কিভাবে পেলে? আল্লাহর দান বলেই না পেয়েছো ৷ সুতরাং কোনো দুর্ভাগা বান্দা যদি বলে সন্তান আমার কাছে অধিক প্রিয় ৷ তাহলে কিভাবে আল্লাহ তা গ্রহণ করবেন? কিভাবে আল্লাহ তাআলা তা মাফ করবেন?

সাধারণ মানুষের পরীক্ষাও হয়ে থাকে খুব সাধারণ ৷ কিন্তু যিনি আল্লাহর যত প্রিয়, যত বেশি নৈকট্যপ্রাপ্ত ৷ তার পরীক্ষা হয় ততো কঠিন ৷ হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম খলিলুল্লাহ এবং তাওহিদী খান্দানের আদর্শ পুরুষ ৷ তিনিতো মিল্লাতে মুসলিমার পিতা ৷ যেমন কুরআনে বলা হয়েছে ৷

সুতরাং আল্লাহ তা’আলা তাঁর খলিলের মহব্বতের ইমতিহান ও পরীক্ষা নেয়ার ইচ্ছা করলেন ৷ স্বপ্নযোগে আদেশ হলো কলিজার টুকরা ইসমাইলকে যবেহ করে দাও ৷ হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর কলব তো সাধারন মানুষের কলব নয় ৷ সেখানে আল্লাহর প্রতি মহব্বত ছাড়া আর কিসের স্থান হতে পারে? হোক না তা কলিজার টুকরা সন্তান ৷ তিনি সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন লাব্বাইকা ইয়া রব ৷ তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হবে হে আল্লাহ ৷

কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত ৷ কুরবানী না করার পরিণাম

হযরত ইবরাহিম আ. কুরবানি করে আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ছিলেন ৷ তাই তার কুরবানির ঘটনা কুরআনে বিধৃত হয়েছে। কুরবানি ইবরাহিম আ:  এর সুন্নাত। মুমিনের জন্য পরীক্ষা। ঈমান-আমল ও নিয়তের পরিশুদ্ধতার যাচাই। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন—
فلما بلغ معه السعي قال يا بني إني أرى في المنام أي أذبحك فانظر ماذا ترى قال يا أبت افعل ما تؤمر ستجدني إن شاء الله من الصابريل الما ألما وتله الجبين (۱۰۳) وناديناه أن يا إبراهيم (۱۰۶) قذ صدقت الرؤيا إنا لك نجزي الممخسيين (۱۰۰) إن هذا لهو البلاء المبيث (۱۰۶) وأدناه
– بيرنح عظيم (۱۰۷) وتركنا عليه في الآخرين

অর্থ: অতঃপর তিনি (ইসমাইল আ.) যখন তার পিতার সঙ্গে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হলেন ৷ তখন ইবরাহিম আ. বলেন, বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তােমাকে আমি যবেহ করছি (নবিদের স্বপ্ন অবশ্য পালনীয় বার্তা;অহি)। এখন তােমার অভিমত কী? বলো ৷

তিনি বললেন, হে আমার পিতা! আপনি যে ব্যাপারে আদিষ্ট হয়েছেন তা বাস্তবায়ন করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় শীঘই আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন।

যখন তারা উভয়ে আনুগত্য (পিতা কুরবানি করতে ও পুত্র কুরবানি হতে) প্রকাশ করলেন এবং ইবরাহিম আ. তার পুত্রকে কাত করে শায়িত করলেন, তখন আমি (আল্লাহ) তাকে আহ্বান করে বললাম, হে ইবরাহিম! তুমি তাে স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে!

এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয় এটি ছিল একটি স্পষ্ট ও বড় পরীক্ষা। আমি তাকে (ইসমাইলকে) মুক্ত করলাম এক কুরবানির (বেহেশত থেকে প্রেরিত একটি দুম্বার) বিনিময়ে। আমি এটি পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। (সূরা: সাফফাত: ১০২-১০৮)।

শয়তান দরদী সেজে পথের তিন তিনটি স্থানে বাধা দেয়ার অপচেষ্টা করল ৷ কিন্তু ইব্রাহিমের মত পিতা যেখানে আল্লাহর মহব্বতে কোরবানি করতে ৷ আর ইসমাইলের মতো পুত্র যেখানে আল্লাহর মহব্বতে কোরবান হতে তৈয়ার ৷ সেখানে ইবলিসি চাল চলবে কেন? শয়তানের তিন-তিনটি বাধা অতিক্রম করে পিতা-পুত্র পৌঁছে গেলেন কোরবানির স্থানে ৷

এবং… এবং শায়িত পুত্রের গলায় ছুরি চালাতে প্রস্তুত হলেন ৷ কোরবান হয়ে গেল আল্লাহর মহব্বতে সামনে সমস্ত মহাব্বত ৷ এমনকি কলিজার টুকরা পুত্রের মোহাব্বত ৷ কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা তো শুধু আপন খলিলের মহব্বতের ইমতিহান করা ৷ পুত্রকে জবেহ করা উদ্দেশ্য নয় ৷ তাই সঙ্গে সঙ্গে তিনি জান্নাত থেকে দুম্বা পাঠালেন ৷ আর আদেশ দিলেন পুত্রের পরিবর্তে জান্নাতি দুম্বা জবাই করার ৷

মহান পিতা ও পুত্রের কোরবানির ঘটনায় মানুষের আকল ও বুদ্ধি পরাস্ত হয়েছে ৷ এখানে আকল ও বুদ্ধির উপর ইশক ও মুহাব্বাত বিজয় ঘটেছে ৷ এবং প্রমাণিত হয়েছে যে আকল ও বুদ্ধির দাসত্ব দ্বারা নয় বরং আল্লাহর প্রতি ইশক ও মুহাব্বতের দাবী পূরণ করেই মানুষ আল্লাহর কাছে প্রিয় মর্যাদাবান হয় ৷

আল্লাহ তাআলা খলিল খলিল পুত্রের এ অতুলনীয় কোরবানিকে এমন কবুল করলেন যে, কিয়ামত পর্যন্ত আনেওয়ালা ইব্রাহিমের তাওহীদ পরিবারের সকল সদস্যের ওপর কোরবানি ফরজ করে দিলেন ৷

গোশত খাওয়ার জন্য কোরবানি

কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত ৷ কুরবানী না করার পরিণাম
কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত ৷ কুরবানী না করার পরিণাম

একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই কুরবানি করতে নবিজি সা. আদিষ্ট হয়েছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন-
فصل لربك وانحر

তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করাে এবং কুরবানি করাে। (সূরা: কাউসার: ২)

তাফসিরে ইবনে কাছিরে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, তুমি তােমার ফরজ, নফল সব নামাজ এবং কুরবানি তােমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে আন্তরিকতার সাথে বিশুদ্ধভাবে পেশ করাে এবং ইবাদত করাে এক ও অদ্বিতীয় স্রষ্টার, যার কোনও শরিক নেই। (তাফসিরে ইবনে কাছির: ৪/৫৯৪, মীর মুহম্মদ কুতুবখানা, করাচি)

শুধু নামাজ, রোজা ও কুরবানি নয়, বান্দার গােটা জীবনই আল্লাহর দাসত্বে নিবেদিত। জীবন-মরণ, ত্যাগ সাধনা সবকিছু তাকে ঘিরে। আল্লাহ তায়ালা নবিজি সা. থেকে এ কথার স্বীকারােক্তিও নিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন—

قل إن صلاتي ونسكي ومحياي ومماتي لله رب العالمين

অর্থ: বলাে, আমার নামাজ, আমার ইবাদত (কুরবানি ও হজ) আমার জীবন ও আমার মরণ জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই উদ্দেশ্যে। তার কোনও শরিক নেই এবং আমি এরই (কুরবানির জন্য আদিষ্ট হয়েছি। আমিই প্রথম মুসলিম। (সুরা আনআম: ১৬২)

কোরবানির পশু জবাই করার দোয়া

রাসুল সা. একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে কুরবানি করতে আদিষ্ট হয়ে তা বাস্তবে রূপায়িত করেছেন নিজ জীবনে। তার উম্মতও যেন কুরবানির উদ্দেশ্য বিস্মৃত না হয়, সে জন্য উদ্দেশ্য-স্মরণকারী একটি দোয়া পাঠ করে তিনি কুরাবানির পশু যবেহ করতেন।

عن جابر بن عبد الله قال ضحی رسول الله صلى الله عليه و سلم يوم عيد بكبشين فقال حين وجههما ( إني وجهت وجهي للذي فطر السموات والأرض حنيفا وما أنا من المشركين . إن صلاتي ونسكي ومحياي ومماتي رب العالمين . لاشريك له وبذلك أمرت وأنا أول المسلمين . اللهم ولك عن محمد وأمته ) .

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সা: ঈদুল আজহার দিন খাসিকৃত ধূসর বর্ণের শিংবিশিষ্ট দুটি ভেরা যবেহ করলেন ৷ ভেরা দুটিকে কিবলামুখি করে শায়িত করা হলে তিনি পাঠ করলে, আসমান-জমিনের স্রষ্টার প্রতি আমি মনােনিবেশিত হলাম।

আমি ইবরাহিম আ. এর একনিষ্ঠ ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত। আমি আল্লাহর সাথে শরিক স্থাপনকারী নই। নিশ্চয়ই আমার নামাজ, কুরবানি, জীবন ও মরণ জগৎসমূহের প্রতিপালকের জন্য নিবেদিত। যার কোনও শরিক নেই আমি এ ব্যাপারে (কুরবানি ও তাওহিদের আহ্বান) অদিষ্ট এবং আমি মুসলমানদের অন্তর্গত।

হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ সা. ও তার উম্মতের পক্ষ থেকে কুরবানি কবুল করুন। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার পাঠ করে তিনি যবেহ করলেন। (আবু দাউদ: ২৭৯৫, ইবনে মাজাহ: ৩১২১, ইবনে খুজাইমা: ২৮৯৯, আদ দারিমি: ১৯৪৬)

কোরবানির ফজিলত

ঈদের দিন কুরবানি করা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল। কুরবানি করার সামর্থ আছে যাদের, তাদের জন্য জিলহজ্ব ১০, ১১ বা ১২ তারিখে কুরবানি করে সাওয়াব অর্জনের সুবর্ণ সুযােগ।

عن عائشة رضي الله عنها أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: ما عمل آدمي من عمل يوم النحر أحب إلى الله من إهراق الدم، وإنه لتا تي يوم القيامة في فرشه بقرونها وأشعارها وأظلا فها، وإن الدم ليقع من الأرض فطيبوا بها

হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবিজি সা. বলেছেন, কুরবানির দিনে মানুষের কুরবানি করা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল। কিয়ামতের দিন কুরবানির পশু তার পশম-চুল, শিং ও নখসহ উপস্থিত হবে ৷ কুরবানির পশুর রক্ত জমিনে পড়ার পূর্বেই আল্লাহর কাছে কুরবানি
কবুল হয়ে যায়। (তিরমিজি শরিফ: ১৪৯৩, ইবনে মাজাহঃ ৩১২৬, আল হাকিম: ২/৩৮৯)

কার উপর কোরবানি ওয়াজিব

দশে জিলহজের ফজর থেকে বারই ই জিলহজ এর সন্ধ্যা পর্যন্ত অর্থাৎ কুরবানীর দিনগুলোতে যার নিকট সাদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার পরিমাণ অর্থ সম্পদ থাকে ৷ তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব ৷

  • মুসাফিরের ওপর সফরে থাকলে কুরবানী করা ওয়াজিব নয় ৷
  • কোরবানি ওয়াজিব না হলে ও নফল কোরবানি করলে কোরবানির সওয়াব পাওয়া যাবে ৷
  • কোরবানি শুধু নিজের পক্ষ থেকে ওয়াজিব হয় ৷ সন্তানাদি মাতাপিতা ও স্ত্রী পক্ষ থেকে ওয়াজিব হয়না ৷ তবে তাদের পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তার নফল কোরবানি হিসেবে গণ্য হবে ৷
  • যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় সে কোরবানির নিয়তে পশু ক্রয় করলে সেই পশু দিয়ে তাকে কোরবানি করতে হবে ৷ এটা তার জন্য ওয়াজিব ৷
  • কোন কাজ হাসিলের জন্য কোরবানির মানত করলে সেই মকসুদ পূর্ণ হলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব ৷ এক্ষেত্রে লোকটি যদি গরিব হয় তাকে অবশ্যই কোরবানি করতে হবে ৷
  • যার সমস্ত উপার্জন বা অধিকাংশ উপার্জন হারাম ৷ তাকে শরিক করে কোরবানি করলে অন্যান্য সকল শরীকের কোরবানি অশুদ্ধ হয়ে যাবে ৷

কোরবানি না করার পরিণাম

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি না-করা ঘৃণিত অপরাধ। সাওয়াব অর্জনের এ সুবর্ণ সুযােগ পাওয়া সত্ত্বেও যারা উদাসীন। কুরাবানি করা ওয়াজিব হওয়ার পরেও যারা কুরবানি করে না তাদের প্রতি রাসুল সা. অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। রাগত স্বরে শাসিয়েছেন।

عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله  ص من وجد سعة لأن يضحي فلم يضح فلا يحضر مصلانا۔ رواه الحاكم مرفوعا هكذا و صححه

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত নবিজি সা. বলেছেন যে কুরাবানি করার সামর্থ্য রাখে অথচ কুরাবানি করেনি সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (হাকিম: ২/৩৮৯, আততারগিব ওয়াত-তারহিব ১৪৫৪)

অন্য রেওয়াতে আছে, সে যেন কিছুতেই আমাদের ঈদগাহে না আসে।। আল্লাহ পাক রাব্দুল আলামিন আমাদেরকে মুখলিস হয়ে ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই নামাজ-রােজা-হজ ও কুরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

শেষকথাঃ

সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করে হাজারো মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন ৷ আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাও জানাতে পারেন ৷ নিচের কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন নির্দ্বিধায় ৷ আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন ৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান ৷

ফেসবুকে আমরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *