বৈশাখের কবিতা | নববর্ষের ছড়া-কবিতা
বৈশাখের কবিতা, পহেলা বৈশাখের কবিতা, নববর্ষের কবিতা (Boishakher kobita): বৈশাখের কবিতা বলতে সেই কবিতাকেই বুঝায় যে কবিতা লেখা হয় বাংলা সনের প্রথম মাস বৈশাখের আগমনী বার্তা, রূপ, বৈচিত্র এবং বৈশাখ মাসে মানুষের আবেগ, অনুভুতি , ভালোবাসা ও উৎসব নিয়ে। বৈশাখ মাসের ১ম দিনটি হলো পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বলা হয়। তাই বৈশাখের কবিতাকে নববর্ষের কবিতা বা পহেলা বৈশাখের কবিতা ও বলা হয়ে থাকে। ভারতের ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামে বৈশাখের প্রথম দিনকে পয়লা বৈশাখ বলে থাকে।
আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা দিবসের ছড়া-কবিতা
ইসলামে নওরোজ বা পয়লা বৈশাখ পালন
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন–“রাসূলে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করলেন। তখন মদিনাবাসী দুটি খেলা-ধুলা করতেন। তিনি বললেন: এ দুটি দিন কি? তারা বলল: আমরা এতে জাহিলি যুগে খেলা-ধুলা করতাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তার পরিবর্তে উত্তম দুটি দিন দিয়েছেন: ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর” (আবু দাউদ শরীফ: ১১৩৪)
ওই দিন দুটি ছিলো ‘নওরোজ’ বা নববর্ষ। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন– যে অনারব দেশ ভ্রমন করে এরপর তাদের নওরোজ ও মেহেরজান উৎযান করে, তাদের সাথেই তাকে উঠানো হবে” (সুনানে বায়হাকী ২/৩২৫)
পহেলা বৈশাখ পালন করা কি জায়েজ?
আল্লামা ইবনে তাইমিয়া এই হাদীস সহীহ বলেছে। তিনি বলেন – “এ হাদীস প্রমাণ করে যে, মুসলমানদের জন্য কাফেরদের উৎসব পালন করা হারাম। কারণ, রাসূলে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের জাহিলী যুগের দুটি উৎসব পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তাদের রীতি অনুযায়ী সে দিন দুটি তাদের আনন্দ-উৎসবের অনুমতি দেননি। বরং বলেছেন—“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এ দুটি পরিবর্তণ করে দিয়েছেন।” (ফয়জুল কালাম, ৫১১)
আল্লামা ইবনে হাজার বলেন–‘মুশরিকদের উৎসব-সমূহে আনন্দ-খুশী প্ৰকাশ করা বা তাদের মতো আনন্দ-উৎসব পালন করা হাদীসসের মাধ্যমে না জায়েজ প্রমাণিত হলো।
শরিয়তের মানদণ্ড হচ্ছে- “হে মানব জাতি! তোমরা পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু আহার কর। সাবধান! তোমরা শয়তানের পদাংঙ্ক অনুসরণ করো না, নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সে তোমাদেরকে পাপ ও খারাপ কাজের পরামর্শ দিবে।”৭(সূরা আল-বাকারা, আয়াত- ১৬৮-১৬৯ ) “আল্লাহ তা‘য়ালা নির্দিষ্টভাবে কিছু বিষয় বা বস্তুগুলোকে হারাম ঘোষণা করেছেন এবং নির্দিষ্টভাবে কিছুকে হালাল ঘোষণা করেছেন।” কেননা রাসূল (সা.) বলেছেন-“হালাল স্পষ্ট এবং হারাম স্পষ্ট।’ ৮(সহীহ বুখারী, খ–১, পৃ:২০, হাদিস নং- ৫২; সহীহ মুসলিম, খ–৩, পৃ: ১২১৯, হাদিস নং- ১০৭) এ ছাড়াও আল্লাহ তা‘য়ালা বলেন-“হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর এবং সৎ কাজ কর।” ৯ (সূরা আল-মুমিনুন, আয়াত-৫১)
সুতরাং ইসলামী আইন শাস্ত্র উসূলে ফিকহের নিয়ম অনুযায়ী “আসল ও ফারাহ” একই জাতীয় হলে তা ‘আসল বস্তুর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে হালাল বা হারাম হয়। যেমন- মদ হরাম। এর দ্বারা কোন জিনিস তৈরি হলে সেটাও হারাম হবে। তাই যে কোন বিষয় বা উৎসব হালাল না হারাম তা নির্ভর করে তার উৎপত্তি, উদ্দেশ্য ও ফলাফলের উপর। কোনো কাজের উদ্দেশ্য বা পরিণতি যদি মানুষের অনিষ্টের কারণ হয় বা সমগ্র মানব সমাজ ক্ষতির সম্মুখীন হয় তবে ইসলামে হারাম বলেই গণ্য হবে। আর যদি এর উদ্দেশ্য হয় মানুষের কল্যাণ, তাহলে একে হারাম বলা যায় না।
বৈশাখের কবিতা | নববর্ষের ছড়া-কবিতা
বোশেখ এলে
দীদার মাহদী
বোশেখ এলে অশ্লীলতার
উন্মুক্ত হয় দ্বার,
হিন্দুয়ানি সংস্কৃতিতে
মুসলমানের হার ৷
বোশেখ এলে তরুণ যুবক
যুবতীদের সাজ,
ঈমান নিয়ে টানাটানি
ভাগে তাদের লাজ ৷
বোশেখ এলে মেলার নামে
হয় যেসকল কাজ,
কত বড়ো বিধ্বংসী তা
ভাবতে পারো আজ!
বোশেখ এলে ফিরে আসে
কাল বোশেখী ঝড়,
নোংরামী সব নিক উড়িয়ে
ভেঙে মনের ঘর ৷
ছদ্মবেশে শিরক
—দীদার মাহদী
সকল গুনাহ ক্ষমা হলেও
শিরক হবে না ক্ষমা,
তাওবা ছাড়া যতই করো
নেকি আমল জমা ৷
শয়তানি চাল বুঝতে হবে
এই দুনিয়ার মাঝে,
থাকবে সজাগ শিরক হয়ে যায়
আমার সে কোন কাজে ৷
ইবলিসে তার লক্ষ্যে আজও
ছুটছে দিনে-রাতে,
জাহান্নামী করতে মানুষ
শিরকি কাজে মাতে ৷
সরাসরি মূর্তিপূজায়
ডাক না দিয়ে বরং,
ছদ্মবেশে শিরকি কাজের
তুলছে নানান ধরন ৷
বর্ষবরণ নামে ঐ যে
মঙ্গল শোভাযাত্রা,
শিরকি অনেক কাজের ভেতর
এটা একটি মাত্রা ৷
বাঙালি সংস্কৃতির নামে
শিরক ঢুকিয়ে দিয়ে,
ইবলিসে দেখ দূরে বসে
হাসছে তোদের নিয়ে ৷
ঈমান-আমল ধ্বংস থেকে
মুক্ত রাখতে হলে,
বৈশাখী সব শিরক প্রথাকে
যা না দুপায় দলে ৷
নববর্ষের ছড়া-কবিতা
শুভেচ্ছা নাও বাংলা সনের
প্রথম দিনে আজ,
ভূত পেত্নির কল্লা দিয়ে
না সেজো না সাজ!
বরং তুমি প্রভূর কাছে
চাও দয়া আর মাফ,
এই জীবনের খেলাঘরে
করছো যতো পাপ!
—শুভেচ্ছাসহ
দীদার মাহদী
পহেলা বৈশাখের কবিতা ও ছবি ২০২৩
শেষ কথা
সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করে হাজারো মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন ৷ আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাও জানাতে পারেন ৷ নিচের কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন নির্দ্বিধায় ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন ৷ আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন ৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান ৷