আয়াতুল কুরসী (Ayatul Kursi) আরবি, উচ্চারণ, বাংলা অনুবাদ এবং ফজিলত

আয়াতুল কুরসী (Ayatul Kursi) আরবি, উচ্চারণ, বাংলা অনুবাদ এবং ফজিলত

আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ ৷ সুপ্রিয় পাঠক! অনেক অনেক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের টপিকে আলোচনা ৷ আজ আমরা অত্যন্ত বহুল পরিচিত একটি দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করবো ৷ আর সেটি হচ্ছে আয়াতুল কুরসি ৷ ayatul kursi bangla উচ্চারণ ৷

আয়াতুল কুরসি সম্পর্কে শুনে নি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর ৷ কারণ আয়াতুল কুরসির এত ফজিলত ৷ এবং এর ব্যবহার এত ব্যাপক যে, ছোট থেকে বড় শিক্ষিত থেকে মূর্খ প্রায় সবাই জানে ৷ এবং আয়তুল কুরসির ফজিলত, আয়াতুল কুরসির মহত্ত্ব এবং বারাকাত সম্পর্কে কিছু না কিছু জানাশোনা আছে ৷

তদুপরি আজকের আর্টিকেলে আমরা আয়াতুল কুরসী কি? আয়াতুল কুরসির ফজিলত ৷ আয়তুল কুরসির আমল ৷ কখন কিভাবে করতে হবে? বিস্তারিত আলোকপাত করার প্রয়াস চালাবো ইনশাআল্লাহ ৷ আমাদের সঙ্গে থাকুন ৷ শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ুন ৷ আশা করছি উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ ৷

 

আয়াতুল কুরসী (Ayatul Kursi) আরবি, উচ্চারণ, বাংলা অনুবাদ এবং ফজিলত

আয়াতুল কুরসী (Ayatul Kursi) আরবি, উচ্চারণ, বাংলা অনুবাদ এবং ফজিলত
আয়াতুল কুরসী (Ayatul Kursi) আরবি, উচ্চারণ, বাংলা অনুবাদ এবং ফজিলত

আয়াতুল কুরসী কী?

প্রিয় পাঠক! প্রথমে আসুন আয়তুল কুরসির পরিচয় সম্পর্কে জানি ৷ আয়াতুল কুরসি এটা কি? এক কথায় পরিচয় তুলে ধরলে এভাবে বলতে হয় ৷ সুরা বাকারাহর ২৫৫ নাম্বার আয়াতকে ‘আয়াতুল কুরসী’ বলা হয়।

আর শব্দ বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় ৷ আয়াতুন অর্থ চিহ্ন, সূত্র, বাক্য ইত্যাদি । কুরসি, কুরসী, কুরছি যেভাবেই বলি (বিশেষ্য) অর্থ হলো, বসার উচ্চ আসনবিশেষ; চেয়ার; কেদারা বা পা রাখার স্থান ৷

কোরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াত

 

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অসংখ্য আয়াত নাযিল করেছেন ৷ পবিত্র কুরআনের আয়াত সংখ্যা নিয়ে যদিও কিছুটা মতভেদ আছে ৷ তবে সর্বাধিক প্রচলিত মতামত হচ্ছে পবিত্র কুরআনে ৬৬৬৬ টি আয়াত রয়েছে ৷ মুতাওয়ারাছ ও মুতলাক্কা বিল কবুল তথা যুগ পরম্পরায় পূর্বসূরিদের থেকে প্রাপ্ত এবং সর্বজনস্বীকৃত গণনা পদ্ধতিগুলোতে ৬২০৪ এর কম এবং ৬২৩৬ এর বেশি কোন সংখ্যা নেই। প্রথমটি বসরী গণনার আয়াত সংখ্যা আর দ্বিতীয়টি কুফী গণনার আয়াত সংখ্যা।

হজরত আবু জর জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি নাজিলকৃত সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন আয়াত কোনটি? তিনি বলে, আয়াতুল কুরসি। (নাসাঈ)

এ আয়াতে একান্তভাবে তাওহিদের পরিচয়, ক্ষমতা, স্থায়িত্ব তুলে ধরা হয়েছে এবং ইসম ও সর্বনামের মাধ্যমে ১৭বার আল্লাহর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ কারণেই এ আয়াতটি কোরআনের শ্রেষ্ঠতম আয়াত।

 

কোরআনের আয়াত সংখ্যা কত?

 

এ বিষয়টিকে ইবনুল জাওযী রহঃ পরিস্কার ভাষায় লিখেছেনঃ

فقد وقع إجماع العادين على أن القرآن ستة ألاف ومئتا أية، ثم اختلفوا فى الكسر الزائد على ذلك….

অর্থাৎ আয়াত গণনাকারীদের এ ব্যাপারে ইজমা হয়েছে যে, মোট আয়াত সংখ্যা ৬২০০ এর কিছু বেশি। কত বেশি তা নিয়ে তাদের মাঝে ইখতিলাফ হয়েছে।

এরপর ইবনুল জাওযী রহঃ দুইশো এর কত বেশি সে সম্পর্কে আয়াত সংখ্যা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সেখানে ৬২০৪ এর কম এবং ৬২৩৬ এর বেশি কোন সংখ্যার কথা উল্লেখ করেননি।

আয়াত সংখ্যা সম্পর্কে লিখিত কিতাবসূমহ (যা প্রায় একশোর কাছাকাছি) যে কিতাবই অধ্যয়ন করা হোক ইবনুল জাওযী রহঃ এর উল্লেখকৃত ইজমার কথা স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে সামনে আসবে।

 

উপরোক্ত আলোচনার আলোকে আশা করি পরিস্কার ধারণা হয়ে গেছে যে, কুরআনে কারীমের আয়াত সংখ্যা ৬২৩৬টি। এটাই বিশুদ্ধ। ৬৬৬৬ যে সংখ্যার কথা বলা হয়ে থাকে তা নিরেট গলদ মাশহুর বা ভুল প্রচলন।

বিস্তারিত দেখতে হলে পড়ুনঃ আলকাউসার, কুরআনুল কারীম সংখ্যা-৮৭-১৬১ পৃষ্ঠা, প্রকাশকাল ২০১৬ ঈসাব্দ।

আয়াতুল কুরসী আরবি

 

اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ-

 

আয়াতুল কুরসী বাংলা উচ্চারণ – Ayatul Kursi Bangla

 

আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তা’খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ’ ই’ন্দাহূ ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতূনা বিশাইয়্যিম্ মিন ‘ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ’ ওয়াসিআ’ কুরসিইয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ওয়ালা ইয়াউ’দুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়্যুল আ’জিম। (সূরা আল-বাক্বারা আয়াত-২৫৫)

আয়াতুল কুরসী ডাউনলোডঃ

আয়াতুল কুরসী
আয়াতুল কুরসী

আয়াতুল কুরসি বাংলা অর্থ

 

আল্লাহ! তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি স্বাধীন ও নিত্য নতুন ধারক, সব কিছুর ধারক। তন্দ্রা ও নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করেনা। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই তাঁর। কে আছে এমন, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? সম্মুখের অথবা পশ্চাতের সবই তিনি অবগত আছেন। একমাত্র তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত, তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারেনা। তাঁর আসন আসমান ও যমীন ব্যাপী হয়ে আছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাঁকে বিব্রত হতে হয়না। তিনিই সর্বোচ্চ, মহীয়ান। (আয়াতুল কুরসী)

আয়াতুল কুরসি বাংলা
আয়াতুল কুরসি বাংলা

আয়াতুল কুরসির গুরুত্ব ও ফজিলত

 

এ আয়াতকে আয়াতুল কুরসী বলা হয়। এটাকে ইসমে আযমও বলা হয়। (তিরমিযী হা: ৩৪৭৮, আবূ দাঊদ হা: ১৪৬৯, হাসান)

অন্য আয়াত নিয়ে যদিও হাদীস আছে-

عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ يَزِيدَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ اسْمُ اللَّهِ الأَعْظَمُ فِي هَاتَيْنِ الآيَتَيْنِِ ‏:‏ ‏(‏ وإلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ ‏)‏ وَفَاتِحَةِ آلِ عِمْرَانَ ‏(‏الم * اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ ‏)‏ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏

আসমা বিনতু ইয়াযিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার মহান নাম (ইসমে আযম) এই দুই আয়াতের মাঝে নিহিত আছে (অনুবাদ) : “আর তোমাদের মা’বূদ একমাত্র আল্লাহ। তিনি ছাড়া অন্য কোন মা’বূদ নেই। তিনি দয়াময়, অতিদয়ালু”- (সূরা বাক্বারাহ্‌ ১৬৩)। আর সূরা আ-লি ‘ইমরানের প্রারম্ভিক আয়াত (অনুবাদ) “আলিফ-লাম-মীম। তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া অন্য কোন মা’বূদ নেই। তিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী”- (সূরা আ-লি ‘ইমরান ১-২)।

হাসানঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ৩৮৫৫)।

এ আয়াতের ফযীলাত সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে। যেমন উবাই বিন কা‘ব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হল আল্লাহ তা‘আলার কিতাবে কোন্ আয়াত সবচেয়ে বড়? তিনি বললেন: আয়াতুল কুরসী। (সহীহ মুসলিম হা: ৮১০)

যে ব্যক্তি সকাল বেলায় আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তানের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকবে। আবার সন্ধ্যায় পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত শয়তানের অনিষ্ট থেকে মুক্ত থাকবে। (হাকিম ১/৫৬২, সহীহ)

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীস থেকে জানা যায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি রাতে ঘুমানোর পূর্বে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তার জন্য আল্লাহ তা‘আলার তরফ থেকে একজন রক্ষক নিযুক্ত থাকবে এবং ভোর পর্যন্ত তার নিকট কোন শয়তান আসতে পারবে না। (সহীহ বুখারী হা: ২৩১১, সহীহ মুসলিম হা: ১৪২৫)

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:

مَنْ قَرَأَ آيَةَ الْكُرْسِيِّ فِيْ دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ مِكْتُوْبَةٍ لَمْ يَمْنَعْهُ مِنْ دُخُوْلِ الْجَنَّةِ اِلَّا اَنْ يَمُوْتَ<

যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতে যেতে মৃত্যু ছাড়া কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। (সিলসিলা সহীহাহ হা: ৯৭২, মিশকাত হা: ৯৭৪, সহীহ)

আয়াতুল কুরসীর এত ফযীলত ও মহত্ত্বের মূল কারণ হলো এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলার তাওহীদ ও গুণাবলী বর্ণনা করা হয়েছে।

 

আয়াতুল কুরসি ও শয়তানের ঘটনা

 

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত :
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে রমযানের যাকাত হিফাযত করার দায়িত্বে নিযুক্ত করলেন। এক ব্যক্তি এসে অঞ্জলি ভর্তি করে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করলাম এবং বললাম, আল্লাহ্‌র কসম! আমি তোমাকে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে উপস্থিত করব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি খুব অভাবগ্রস্থ, আমার যিম্মায় পরিবারের দায়িত্ব রয়েছে এবং আমার প্রয়োজন তীব্র।

তিনি বললেন, আমি ছেড়ে দিলাম। যখন সকাল হলো, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবু হুরায়রা, তোমার রাতের বন্দী কি করলে? আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! সে তার তীব্র অভাব ও পরিবার, পরিজনের কথা বলায় তার প্রতি আমার দয়া হয়, তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বললেন, সাবধান! সে তোমার কাছে মিথ্যা বলেছে এবং সে আবার আসবে।

‘সে আবার আসবে’ আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উক্তির কারণে আমি বুঝতে পারলাম যে, সে পুনরায় আসবে। কাজেই আমি তার অপেক্ষায় থাকলাম। সে এল এবং অঞ্জলি ভরে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে নিয়ে যাব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। কেননা, আমি খুবই দরিদ্র এবং আমার উপর পরিবার-পরিজনের দায়িত্ব ন্যস্ত, আমি আর আসব না।

তার প্রতি আমার দয়া হল এবং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল হলে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবু হুরায়রা! তোমার বন্দী কী করলে? আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! সে তার তীব্র প্রয়োজন এবং পরিবার-পরিজনের কথা বলায় তার প্রতি আমার দয়া হয়। তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বললেন, খবরদার সে তোমার কাছে মিথ্যা বলেছে এবং সে আবার আসবে। তাই আমি তৃতীয়বার তার অপেক্ষায় রইলাম।

সে আসল এবং অঞ্জলি ভর্তি করে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করলাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অবশ্যই নিয়ে যাব। এ হলো তিনবারের শেষবার। তুমি প্রত্যেক বার বল যে, আর আসবে না, কিন্তু আবার আস। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিখিয়ে দেব। যা দিয়ে আল্লাহ তোমাকে উপকৃত করবেন। আমি বললাম, সেটা কী? সে বলল, যখন তুমি রাতে শয্যায় যাবে তখন আয়াতুল কুরসী  আয়াতের শেষ পর্যন্ত পড়বে।

তখন আল্লাহ্‌র তরফ হতে তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত হবে এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না। কাজেই তাকে ছেড়ে দিলাম। ভোর হলে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, গত রাতের তোমার বন্দী কী করল? আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! সে আমাকে বলল যে, সে আমাকে কয়েকটি বাক্য শিক্ষা দেবে যা দিয়ে আল্লাহ আমাকে লাভবান করবেন। তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি আমাকে বললেন, এই বাক্যগুলো কী? আমি বললাম, সে আমাকে বলল, যখন তুমি তোমার বিছানায় শুতে যাবে তখন আয়াতুল কুুুুরসি প্রথম হতে আয়াতের শেষ পর্যন্ত পড়বে ৷

এবং সে আমাকে বলল, এতে আল্লাহ্‌র তরফ হতে তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত থাকবেন এবং ভোর পর্যন্ত তোমার নিকট কোন শয়তান আসতে পারবে না। সাহাবায়ে কিরাম কল্যাণের জন্য বিশেষ লালায়িত ছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, এ কথাটি তো সে তোমাকে সত্য বলেছে। কিন্তু হুশিয়ার, সে মিথ্যুক। হে আবু হুরায়রা! তুমি কি জান, তিন রাত ধরে তুমি কার সাথে কথাবার্তা বলেছিলে। আবু হুরায়রা (রাঃ) বললেন, না। তিনি বললেন, সে ছিল শয়তান।!

আপনার জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু লেখা

আয়াতুল কুরসির ফজিলত হাদীস

عن أبى بن كعب، قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أبا المنذر أى آية معك من كتاب الله أعظم ‏”‏ ‏.‏ قال قلت الله ورسوله أعلم ‏.‏ قال ‏”‏ أبا المنذر أى آية معك من كتاب الله أعظم ‏”‏ ‏.‏ قال قلت ‏{‏ الله لا إله إلا هو الحى القيوم ‏}‏ قال فضرب في صدري وقال ‏”‏ ليهن لك يا أبا المنذر العلم ‏”‏ ‏.

উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত :
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হে আবুল মুনযির! তোমার কাছে আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াতটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি আবার বলেন, হে আবুল মুনযির! তোমার কাছে আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াতটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ? আমি বললাম, “আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম” (আয়াতুল কুরসী)। তখন তিনি আমার বুকে (হালকা) আঘাত করে বলেনঃ হে আবুল মুনযির! তোমার জ্ঞান আনন্দদায়ক হোক।

সহীহঃ মুসলিম।

عن أبي هريرة، قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏”‏ من قرأ حم المؤمن إلى ‏:‏ ‏(‏إليه المصير ‏)‏ وآية الكرسي حين يصبح حفظ بهما حتى يمسي ومن قرأهما حين يمسي حفظ بهما حتى يصبح ‏”‏ ‏.‏ قال أبو عيسى هذا حديث غريب ‏.‏ وقد تكلم بعض أهل العلم في عبد الرحمن بن أبي بكر بن أبي مليكة المليكي من قبل حفظه ‏.‏ وزرارة بن مصعب هو ابن عبد الرحمن بن عوف وهو جد أبي مصعب المدني ‏.

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত :
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালবেলা সূরা আল-মু’মিন-এর হা-মী-ম হতে ইলাইহিল মাসীর (১, ২, ও ৩ নং আয়াত) পর্যন্ত এবং আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াত করবে সে এর উসীলায় সন্ধ্যা পর্যন্ত (আল্লাহ্ তা’আলার) হিফাযাতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যা বেলায় তা পাঠ করবে সে ব্যক্তি এর উসীলায় সকাল পর্যন্ত হিফাযাতে থাকবে।

حدثنا محمد بن إسماعيل، قال حدثنا الحميدي، حدثنا سفيان بن عيينة، في تفسير حديث عبد الله بن مسعود قال ما خلق الله من سماء ولا أرض أعظم من آية الكرسي ‏.‏ قال سفيان لأن آية الكرسي هو كلام الله وكلام الله أعظم من خلق الله من السماء والأرض ‏.

মুহাম্মদ ইবনু ইসমাঈল থেকে বর্ণিত :
মুহাম্মদ ইবনু ইসমাঈল-হুমাইদী হতে, বর্ণনা করেন যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসঃ “আসমান-যামীনের মধ্যে আয়াতুল কুরসীর চাইতে মহান আর কোন কিছুই আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টি করেননি”, এর ব্যাখ্যায় সুফ্ইয়ান ইবনু ‘উয়াইনাহ্ বলেন, আয়াতুল কুরসী হল আল্লাহ তা‘আলার কালাম, আর আল্লাহ তা‘আলার কালাম তো নিঃসন্দেহে আসমান-যামীনের সকল সৃষ্টির চাইতে মহান।

আয়াতুল কুরসী ভিডিও

 

 

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করে হাজারো মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন ৷ আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাও জানাতে পারেন ৷ নিচের কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন নির্দ্বিধায় ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন ৷ আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন ৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *