ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন | ক্যারিয়ার ও সংগঠন

ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন | ক্যারিয়ার ও সংগঠন

আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ ৷ প্রিয় পাঠক! আমাদের ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা নিন ৷ আশা করছি দ্বীনি অনুভূতি নিয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত রাখছেন ৷ একজন মুসলিম হিসেবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের খলিফা হিসেবে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের আন্দোলন করে চলেছেন ৷ দ্বীনি সংগঠন ও ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানার জন্যই আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়তে এসেছেন ৷ এজন্য আপনাকে সাধুবাদ জানাই ৷ শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন ৷ আশা করছি চমৎকার কিছু তথ্য আপনার সাথে আমরা শেয়ার করতে পারব ইনশাআল্লাহ ৷

ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন | ক্যারিয়ার ও সংগঠন
ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন | ক্যারিয়ার ও সংগঠন

ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন | ক্যারিয়ার ও সংগঠন

সংগঠনের গুরুত্ব

আখিরাতে মুক্তি ও দুনিয়াতে উন্নতি সাধনের জন্য আল্লাহপ্রদত্ত প্রতিভার সর্বোত্তম বিকাশের মাধ্যমে জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ার নামই হচ্ছে উত্তম ক্যারিয়ার। ক্যারিয়ার অর্থ শুধু দুনিয়াতে বড় ডিগ্রি, ভালাে চাকরি কিংবা ভালাে রেজাল্ট করা নয়। দুনিয়ার যে ডিগ্রি বা ভালাে রেজাল্ট আখিরাতে নাজাতের জন্য কাজে আসে না কিংবা নাজাতের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়, উক্ত ডিগ্রি দুনিয়া পূজারীদের দৃষ্টিতে উত্তম ক্যারিয়ার হতে পারে; কিন্তু আল্লাহপ্রেমিক বান্দাদের কাছে ঐ ধরনের ডিগ্রি মূল্যহীন।

আল্লাহপ্রেমিক বান্দারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যই দুনিয়াতে কাজ করে। তাদের ক্যারিয়ার গঠনের পেছনে দুনিয়ার সুখ-শান্তি, বাড়ি-ঘর, গাড়ি, বিত্তবৈভব, যশ-খ্যাতি অর্জন থাকে না। আল্লাহকে খুশি করার জন্যই আল্লাহপ্রেমিক বান্দারা ক্যারিয়ার গঠন করতে চায়। আল্লাহ পৃথিবীতে সকলকে সমান মেধা দান করেননি। আবার মেধাহীন কোনাে মানুষ নেই। একেকজন ব্যক্তিকে একেক ধরনের মেধা দিয়েছেন। প্রত্যেকের মেধার সমন্বিত বিকাশের মাধ্যমেই একটি সমাজ উন্নত হতে পারে। তাই যাকে যতটুকু মেধা দেওয়া হয়েছে তা আত্মপ্রতিষ্ঠার পরিবর্তে দীন প্রতিষ্ঠা ও মানবতার কল্যাণে লাগাতে হবে।

এই জন্য মেধাবীদের দীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জড়িত হওয়া এবং এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানাে উচিত। দীন প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা সাধনা করা সুন্নাত বা নফল কোনাে কাজ নয়। এটা একজন মুসলমানের ঈমানের অপরিহার্য দাবি। আর এ দাবি পূরণে সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ হতে হয়। কারণ সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া কোনাে সমাজ পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।

অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে এমন সংগঠনে সম্পৃক্ত হতে হবে

 

সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ হওয়ার পর সংগঠনের নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। তাই এমন সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ হওয়া উচিত, যে সংগঠন ছাত্রদের মেধা বিকাশে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে এবং কোনাে রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তির পরিবর্তে যােগ্য, দক্ষ ও আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ার ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা প্রদান করে। আমার জানা মতে এমন কিছু ছাত্রসংগঠন আছে যারা মূল রাজনৈতিক দল কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। তাদেরকে ক্ষমতার সিড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফলে পড়াশােনা ও ছাত্রসমস্যার পরিবর্তে রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নই তাদের মূল কর্মসূচি থাকে।

এর বিপরীত এমন ছাত্রসংগঠনও আছে, যার কর্মসূচিই হচ্ছে ছাত্রদের মেধা বিকাশ। সাংগঠনিক কর্মসূচির অংশ হিসেবেই জনশক্তির ব্যক্তিগত পড়াশােনার খোঁজ-খবর নেয়া হয়। পাঠ্যপুস্তক, ইসলামী সাহিত্য ও পত্র-পত্রিকা পাঠের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সংরক্ষণে ব্যায়ামের প্রতিও উদ্বুদ্ধ করা হয়। কুরআন, হাদীস অধ্যয়ন ও জামায়াতের সাথে নামায আদায়ের খোঁজ-খবর নিয়ে একজন আদর্শ মুসলিম হতে তত্ত্বাবধান করা হয়।

ইসলামী সংগঠনের দায়িত্বশীলদের কাছে জনশক্তির মেধা আমানত

ইসলামী সংগঠন
ইসলামী সংগঠন

জনশক্তির ইসলামী চরিত্র গঠন ও পড়াশােনার তত্ত্বাবধান করার জন্য সংগঠনের দায়িত্বশীলরা সব সময় সচেতন থাকেন। কারণ তারা মনে করেন জনশক্তির মেধা আমানত। দায়িত্বশীলরা দীন প্রতিষ্ঠার জন্যই জনশক্তির প্রতিভা বিকাশের জন্য এত সচেতন। কারণ তারা বিশ্বাস করেন, ইসলামী আন্দোলনের জনশক্তি যারা আছেন, কোনাে না কোনাে ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার মতাে মেধা তাদের আছে। প্রত্যেকের মেধা , প্রতিভা, যােগ্যতা, দক্ষতা সংগঠনের কাছে আমানত। দায়িত্বশীলরা এ আনতের যথাযথ তত্ত্বাবধান করার চেষ্টা করেন। কারণ তাদের সামনে রয়েছে কুরআনের আয়াত, যেখানে মুমিনের গুণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, “যারা-আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুশিয়ার থাকে।” (সূরা মুমিনূন : ৮)

প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ্য, ‘আমানত’ শব্দটি আরবী ‘আমেনুন’ শব্দ থেকে উৎপত্তি হলে এর অর্থ আশ্রয়প্রার্থী ৷ আর আমানুন’ শব্দ হতে উৎপত্তি হলে এর অর্থ ভয়-ভীতিহীন, নিরাপদ। শব্দটির শাব্দিক বিশ্লেষণ এখানে মুখ্য নয়, তাই সেদিকে আলােচনা করা সমীচীন নয়। তবে আভিধানিক অর্থ হতে যতটুকু জানা যায়, এ থেকে বােঝা যায় যে, যার কাছে যে জিনিস আমানত রাখা হয় তা নিরাপদ থাকে, এ সম্পর্কে কোনাে ধরনের ভয়-ভীতি বা শংকা আমানত রাখার সময় থাকে না। তাই মক্কার কাফের-মুশরিকরা তাদের নেতাদের কাছে তাদের জিনিস আমানত না রেখে মুহাম্মদ (স)-এর কাছে আমানত রাখতাে। কারণ তাদের ধারণা ছিল তাঁর কাছে জিনিস নিরাপদ থাকবে।

‘আমানত’ শব্দটি ব্যাপক অর্থবােধক। শুধু টাকা-পয়সা নয়, কারাে গােপন কথা, রাষ্ট্রীয়, সামাজিক বা সাংগঠনিক দায়িত্ব, আল্লাহপ্রদত্ত যােগ্যতা সবই আমানত। তাই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের মেধা ও যােগ্যতাকে সুদূরপ্রসারী, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে ইসলামী সমাজ বিপ্লবের কাজে সর্বোত্তম ব্যবহার করার জন্য দায়িত্বশীলরা চেষ্টা করেন। কারণ আমানতের খেয়ানতনকারী সম্পর্কে আল্লাহর রাসূলের ঘােষণা তার কাছে পরিষ্কার। তাদের এ চেষ্টা সাময়িক নয়, এটা সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের অংশ।

কেননা আল্লাহ তাআলা এখানে আমানত সংরক্ষণের জন্য রাউন’ শব্দ প্রয়ােগ করেছেন। আরবী ভাষায় এটি ইসমে ফায়েল বা কর্তৃবাচক বিশেষ্য। যার বিশেষত্ব হচ্ছে ইস্তেমরার অর্থাৎ যা সব সময় অব্যাহত থাকে। তাই জনশক্তির মেধা কাজে লাগানাে এবং তত্ত্বাবধানের বিষয়টি দায়িত্বশীলদের সার্বক্ষণিক কর্তব্যের অংশ।

দায়িত্বশীলরা আল্লাহর কাছে জবাবদিহির অনুভূতি নিয়ে তত্ত্বাবধান করেন

 

দায়িত্বশীলরা মনে করেন সকল কিছুর জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। সংগঠনের কর্মীগণ দায়িত্বশীলদের সিদ্ধান্তে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার তথা জীবন কুরবান করতেও প্রস্তুত থাকে। তাই তারা আখিরাতে জবাবদিহির অনুভূতি নিয়েই জনশক্তি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। কারণ তার চোখের সামনে ভাসতে থাকে আল্লাহর রাসূলের বাণী, “তােমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল, আর প্রত্যেকেই আপন আপন দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। তাই প্রত্যেক জনশক্তিকে সংগঠনের দায়িত্বশীল সম্পর্কে আস্থাশীল থাকতে হবে যে, তারা জনশক্তির ক্যারিয়ার গঠনে আন্তরিক।

 

ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীলরা জনশক্তির মঙ্গলকামী

 

ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীলরা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মুহাম্মদ (স)-এর আদর্শ অনুকরণ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। রাসূল (স)-এর গুণাবলি সম্পর্কে কুরআনে এভাবে উল্লেখ আছে- “তােমাদের কাছে এসেছে তােমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল। তােমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তােমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়।” (সূরা তাওবা ও ১২৮)

এ আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, রাসূলে কারীম (স)-এর আদর্শের অনুসারী হওয়ার কারণে ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীলরা কোনাে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে গভীরভাবে চিন্তা করেন যে, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জনশক্তির কী ধরনের সমস্যা হতে পারে। জনশক্তির কল্যাণের কথা চিন্তা করেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীলরা ইহসান বা অনুগ্রহকারী

ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীলরা ইহসান বা অনুগ্রহকারী
ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীলরা ইহসান বা অনুগ্রহকারী

সংগঠনের দায়িত্বশীলরা জনশক্তির প্রতিভা কাজে লাগানাের জন্য যতটুকু চেষ্টা করেন সেটা জনশক্তির প্রতি তাদের ইহসান। প্রত্যেক জনশক্তিকে মনে রাখতে হবে, একজন দায়িত্বশীলকে অনেক কাজে সময় দিতে হয়। মনে করুন, তার দশটি দায়িত্ব রয়েছে। আর এই দশটি দায়িত্বের মধ্যে জনশক্তির ক্যারিয়ার পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধান একটি।

এবার একটু ভাবুন, আপনিই শুধু একজন জনশক্তি নন। অনেক জনশক্তির মধ্যে আপনি একজন। নেতৃত্বের দায়িত্বে যারা আছেন মানুষ হিসেবে তাদেরকে ব্যক্তিগত অনেক সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় ৷ এবার বলুন, এত ব্যস্ততার মধ্যে তারা আমাদের জন্য যতটুকু চিন্তা করেন, এটা কি আমাদের জন্য ইহসান নয়?

সংগঠন জনশক্তির ক্যারিয়ার গঠনে কীভাবে সহযােগিতা করতে পারে

১. ক্যারিয়ার অ্যাডভাইস সেন্টার : সংগঠনের ক্যারিয়ার অ্যাডভাইস সেন্টার থাকা দরকার। ব্যক্তির ক্যারিয়ার পরিকল্পনা ও মুসলিম উম্মাহর চাহিদার মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজটি ক্যারিয়ার অ্যাডভাইস সেন্টার করতে পারে। প্রত্যেক জনশক্তির ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার পরিকল্পনা জানা ও উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সার্বিক সহযােগিতা দানই। ক্যারিয়ার অ্যাডভাইস সেন্টারের মূল কাজ হবে। ক্যারিয়ার অ্যাডভাইস সেন্টার বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের প্যানেলের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গঠনে আগ্রহীদের উপদেশ দিতে পারে এবং প্রশিক্ষণের আয়ােজন করতে পারে।

প্রত্যেক জনশক্তি ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার পরিকল্পনা উক্ত সেন্টারে পেশ করবে। সেন্টার ক্যারিয়ার গঠনে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও দিক-নির্দেশনা দান করবে। উল্লেখ্য ক্যারিয়ার অ্যাডভাইস সেন্টার সংগঠনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে থাকা জরুরি নয়। এটা সংগঠনের দৃষ্টিভঙ্গির আলােকে সংগঠনের পেশাদার কিছু ব্যক্তিত্বের সমন্বয়ে গঠন হতে পারে।

২. মেধা অনুযায়ী দায়িত্ব দেওয়া : দায়িত্বশীলদের মেধার প্রতি লক্ষ্য রেখেই জনশক্তির দায়িত্ব দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। একটি সংগঠনে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী বহু ধরনের জনশক্তি থাকে। একজন ভালাে গায়ক হতে পারেন কিন্তু ভালাে লেখক হতে পারেন না। আরেকজন ভালাে প্রশাসক হতে পারেন কিন্তু ভালাে সমাজসেবক হতে পারেন না। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মানুষকে বিশেষ যােগ্যতা দিয়ে
মেধা অনুযায়ী ক্যারিয়ার পরিকল্পনা করা ও উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়ক- এমন দায়িত্ব দেওয়া উত্তম।

৩. অতিরিক্ত দায়িত্বের বােঝা না চাপানো : আল্লাহ তাআলা প্রত্যেককে তার যােগ্যতা অনুযায়ী দীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে কিনা তা জিজ্ঞাসা করবেন। কোনাে একজন জনশক্তি একসাথে তিন-চারটি কাজ করতে পারে। আর আরেকজন জনশক্তিকে একটি কাজ দেওয়া হলেই দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হয়। দায়িত্বের বােঝা তাকে অস্থির করে তােলে। এমন ধরনের জনশক্তিকে ধারণক্ষমতার আলােকেই দায়িত্ব দেওয়া উচিত।

৪. ক্যারিয়ার উইক সাবজেক্ট চুজিং ডে : এইচএসসি/আলিম/এ লেভেল পরীক্ষার পর ক্যারিয়ার উইক পালন করা যেতে পারে। উক্ত সপ্তাহে ফলপ্রার্থী ছাত্রছাত্রীদের জন্য নানা ধরনের কর্মসূচি রাখা যায়। ক্যারিয়ার পছন্দ করার জন্য বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য সরবরাহ, প্রদর্শনী, আলােচনাসভা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠান করা যেতে পারে। আর পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ক্যারিয়ার ডে’ পালন করে বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা গ্রহণে সহযােগিতা করা যায়।

৫. জব ওরিয়েন্টেড ট্রেনিং : ‘জব ওরিয়েন্টেড ট্রেনিং দেওয়া সমাজ ও রাষ্ট্রের মূল দায়িত্ব। এক্ষেত্রে একটি সংগঠন তার জনশক্তির পরিকল্পিত ছাত্রজীবনশেষে কর্মসংস্থান যােগাড়ের ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধান করতে পারে। জনশক্তির পড়াশােনার শেষ লগ্নে তাদের জন্য জব ওরিয়েন্টেড ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কারণ অনেক জনশক্তি ছাত্রজীবন শেষ করে হতাশায় ভােগে। তাই ছাত্রজীবন শেষ করার আগেই কর্মজীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য কিছু ট্রেনিং প্রােগ্রাম নেয়া যেতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যারা ভবিষ্যতে আইন ব্যবসা, শিক্ষকতা, মিডিয়া, প্রশাসন, সমাজসেবা, ব্যবসা বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থানে আগ্রহী, তাদের জন্য সংশ্লিষ্ট পেশার উপযােগী প্রশিক্ষণ দেওয়া ভালাে। এসব ট্রেনিং-এ ব্যক্তিগত বয়ােডাটা তৈরি, চাকরির আবেদনপত্র পূরণ ও ইন্টারভিউ-কৌশল সম্পর্কেও প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।

৬. স্কলারশিপ: অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী আর্থিক সমস্যার কারণে প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারে না। তাদের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা উচিত। এই ধরনের জনশক্তির বায়ােডাটা তৈরি করে ধনী ব্যক্তিদের সাথে যােগাযােগ করা যেতে পারে। একজন ধনী ব্যক্তি একজন গরিব মেধাবী ছাত্রছাত্রীর মেধা বিকাশে এগিয়ে আসলে দেশের অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রীর মেধা বিকাশের পথ সুগম হয়।

৭. উচ্চশিক্ষার প্রতি উৎসাহ: প্রতিভাবান জনশক্তিকে উচ্চশিক্ষার প্রতি উৎসাহ , উদ্দীপনা দেওয়া উচিত। একটু উৎসাহ বা উদ্দীপনায় জনশক্তির মেধার পরিস্ফুটন ঘটে। গ্রাজুয়েশান বা মাস্টার্স করার পরও উচ্চশিক্ষা আছে-এ কথা অনেকেই মনে রাখেন না। দায়িত্বশীলরা জনশক্তির চিন্তার দিগন্ত প্রসারিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে পারেন।

 

ক্যারিয়ার গঠনকেন্দ্রিক জনশক্তি ও দায়িত্বশীলদের মধ্যে ভুল বােঝাবুঝি সষ্টির কারণ

সংগঠনে নেতা ও কর্মীর ভুল বোঝাবুঝি
সংগঠনে নেতা ও কর্মীর ভুল বোঝাবুঝি

দায়িত্বশীলরা জনশক্তির প্রতিভা বিকাশে আন্তরিক থাকার পরও কয়েকটি কারণে ভুল বােঝাবুঝির সৃষ্টি হয় :

১. ক্যারিয়ার সম্পর্কে সঠিক ধারণা ও দৃষ্টিভঙ্গির অভাব : জনশক্তি ও দায়িত্বশীলের কাছে ক্যারিয়ার সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে ভুল বােঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। আর ভুল বােঝাবুঝির কারণে অনেক জনশক্তি মান উন্নয়নে আগ্রহী হয় না। কেউ কেউ ক্যারিয়ার নিয়ে অতিরিক্ত টেনশনে ভােগেন। তারা ক্যারিয়ার বলতে শুধু ভালাে রেজাল্ট করাকেই বােঝে। আবার কেউ কেউ উন্নত ক্যারিয়ারের প্রয়ােজনীয়তাকেও অস্বীকার করতে চায়। উভয় ধরনের প্রান্তিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি পােষণ করা। দরকার।

২. সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও চিন্তার সমন্বয়ের অভাব : জনশক্তি সম্পর্কে দায়িত্বশীলের এবং সাংগঠনিক কাজ সম্পর্কে জনশক্তির সুস্পষ্ট পরিকল্পনার অভাবে মাঝে মধ্যে জনশক্তি ও দায়িত্বশীলের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সংগঠন ও জনশক্তির পরিকল্পনা পরস্পরের কাছে পরিষ্কার থাকলে ভুল বােঝাবুঝির সৃষ্টি হয় না। এছাড়া আরও অনেক কারণে দায়িত্বশীল ও জনশক্তির মধ্যে ক্যারিয়ার গঠন নিয়ে ভুল বােঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে।

 

আপনার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা

 

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক! আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে কমেন্ট ও শেয়ার করে হাজারো মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারেন ৷ আপনার কোন মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাও জানাতে পারেন ৷ নিচের কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন নির্দ্বিধায় ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন ৷ আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন ৷ জাযাকাল্লাহ খাইরান ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *